২০২৪ এ মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সহজ এবং কার্যকর পদ্ধতি

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সহজ এবং কার্যকর পদ্ধতি

বর্তমান এই তথ্যপ্রযুক্তির যুগে স্মার্টফোন প্রত্যেকের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস এ পরিণত হয়েছে। প্রায় প্রত্যেক কাজ করার জন্য এই বর্তমানে স্মার্টফোনের ব্যবহার অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কাজ কিংবা ব্যক্তিগত কাজ এর জন্য স্মার্টফোনের ব্যবহার লক্ষণীয়। ছবি তোলা, প্রিয়জনের সাথে কথা বলা, মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় টাকা পাঠানো, গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট স্ক্যান করা সহ আরো নানারকমের গুরুত্বপূর্ণ কাজ করা যায় এই স্মার্ট ফোন দিয়ে। অনেকেই ভাবেন যে স্মার্ট ফোন দিয়ে এত কিছু করা যায় তাহলে এটি দিয়ে কি টাকা ইনকাম করা সম্ভব। আমি বলব আপনি ইচ্ছা করলে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। আজকে আমরা মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি বলব। আশা করছি এগুলো সব ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করার উপায় গুলো কাজে লাগাতে পারবেন। 

মোবাইল দিয়ে ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করে টাকা ইনকাম

বর্তমানে ফিচারের বা স্পেসিফিকেশন এর তারতম্যের মাধ্যমে বিভিন্ন মাঝারি কিংবা বেশি দামে স্মার্টফোন পাওয়া যায়। মাঝারি বা কম দামে কিংবা বেশি দামি সব মোবাইলেই প্রয়োজনীয় কিছু কাজ করা যায়। মোটামুটি ভালো মানের ক্যামেরা সম্বলিত একটি স্মার্ট ফোন থাকলে থাকলে সেটা দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করে ইউটিউব এ আপলোড করলে সেখান থেকে ভালো ইনকামের সুযোগ রয়েছে। 

ইউটিউব থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করা যায়

ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য একটি স্মার্ট ফোনের প্রয়োজন হবে। স্মার্টফোনের ক্যামেরাটি ব্যবহার করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অথবা ফানি ভিডিও, ডেইলি ব্লগ, ডেইলি ট্রাভেলিং, স্টোরি টেলিং, ডকুমেন্টরি এ ধরনের বিভিন্ন ক্যাটাগরির ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করার মাধ্যমে টাকা ইনকাম হয়। ইউটিউব থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য দুটি শর্ত পূরণ করতে হবে। 

  • ১. গত এক বছরের মধ্যে ১০০০ সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ হতে হবে
  • ২. গত এক বছরের মধ্যে ৪ হাজার ঘন্টা ভিডিও দেখার সময় হতে হবে

নিয়মিত ভিডিও আপলোড করার মাধ্যমে এই দুইটি শর্ত পূরণ করা খুবই সহজ। যদি এই দুইটি শর্ত পূরণ করতে পারেন তাহলে youtube থেকে টাকা ইনকাম শুরু হবে। ভালো পরিমান ভিউ অর্জন করতে পারলে সেখান থেকে মোটা অংকের টাকা ইনকাম করার সুযোগ আছে। 

ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করে মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম

ইউটিউবের মতো বর্তমানে ফেসবুক থেকেও ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করা যায়। যদিও ফেসবুকে ইউটিউবের তুলনায় টাকা ইনকাম করার জন্য বেশি সুযোগ রয়েছে।  ফেসবুক থেকে ভিডিও আপলোড করে টাকা ইনকাম করার জন্য তিনটি শর্ত পূরণ করতে হবে। 

  • ১. পাঁচ হাজার ফলোয়ার থাকতে হবে
  • ২. গত তিন মাসে ৬০০০০ মিনিট ওয়াচ টাইম অথবা ভিডিও দেখার সময় থাকতে হবে
  • ৩. ফেসবুক প্রোফাইলে কিংবা পেইজে কমপক্ষে পাঁচটি ভিডিও থাকতে হবে

উপরের লিখিত এই তিনটি শর্ত পূরণ করতে পারলেই ফেসবুকে থেকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে টাকা ইনকাম শুরু হবে। যদি ফেসবুক থেকে টাকা ইনকাম করার প্রবল ইচ্ছা থাকে নিয়মিতভাবে ভিডিও আপলোড করলে এই দুইটি বা তিনটি শর্ত পূরণ করা খুবই সহজ। তবে তার জন্য নিয়মিতভাবে ভিডিও আপলোড করতে হবে। পাশাপাশি কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও আপলোড করার চেষ্টা করতে হবে। 

মোবাইল দিয়ে রিসেলিং করে টাকা ইনকাম

মোবাইল দিয়ে রিসিং কিংবা ড্রপ শিপিং করে টাকা ইনকাম করা যায়। রিসেলিং হচ্ছে কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট একটি নির্দিষ্ট দামে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তার চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করাকে বুঝায়। উদাহরণস্বরূপ ধরুন একজন পাইকার আপনাকে একটি মোবাইলের দাম ৩৫০০ টাকা বলে দিল এবং এটি একটি পাইকারি মূল্য। এই ৩৫০০ টাকার ফোন বা মোবাইলটি যদি আপনি ৩৭০০ টাকা বিক্রি করেন তাহলে আপনার ২০০ টাকা প্রফিট থাকবে। এভাবে একটি নির্দিষ্ট দামে পাইকারির কাছ থেকে প্রোডাক্ট কিংবা প্রোডাক্ট এর ছবি নিয়ে অনলাইনে মার্কেটিং করে বিক্রি করার প্রক্রিয়াকে রিসেলিং বলে। রিসেলিং কিংবা ড্রপ শিপিংয়ে সাধারণত যারা প্রোডাক্ট বিক্রি করার দায়িত্ব নেই তারা কোন ধরনের প্যাকেজিং বা ডেলিভারির দায়িত্ব নেয় না। প্যাকেজিং থেকে শুরু করে কাস্টমারদের ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব পাইকারি প্রতিষ্ঠানের। তো যারা মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করতে চান তারা চাইলে এ ধরনের ড্রপ শিপিং কিংবা রিসেলিং বিজনেস করতে পারেন। বাংলাদেশের রিসেলিং অথবা ড্রপ শিপিং করার জন্য বর্তমানে জনপ্রিয় মাধ্যম হচেছ dropshup.com.bd

মোবাইল দিয়ে ব্লগিং করে টাকা ইনকাম

আপনার যদি লেখালেখি করতে ভালো লাগে তাহলে মোবাইল দিয়ে মোটামুটি টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অনলাইনে লেখালেখির মাধ্যমে প্রচুর টাকা ইনকামের সুযোগ আছে। এর জন্য প্রথমে আপনাকে একটি ব্লক সাইট অথবা ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে হবে। ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য অনেক মাধ্যম রয়েছে। তারমধ্যে কম মূল্য ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ব্লগার ডট কম। প্রাথমিকভাবে শুরু করার জন্য ব্লগার ডট কম বেস্ট। 

blogger.com একটু ওয়েবসাইট চালু করে নিয়মিত ভাবে মোবাইল দিয়ে লেখালেখি শুরু করলে। সেই লেখাকে বিভিন্ন মাধ্যমে মনিটাইজ করে টাকা ইনকাম করা যায়। একটি ওয়েবসাইটকে টাকা ইনকামের উপযোগী করার জন্য অনেকগুলো উপায় রয়েছে।  যেমন:

  • ১. গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করা
  • ২. Adsterra.com ডটকমের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করা। 
  • ৩. এফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইনকাম করা
  • ৪. রিসেলিং করে ইনকাম করা বা ড্রপ শিপিং করে ইনকাম করা

উপরে লিখিত এই চারটি পদ্ধতি ছাড়াও অনলাইনে মোবাইলের মাধ্যমে ওয়েবসাইট দিয়ে ইনকাম করার আরো অনেক উপায় রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে শুরু করার জন্য এগুলোই সহজ উপায়। 

মোবাইল দিয়ে এফিলেট মার্কেটিং করে টাকা ইনকাম

মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার যত উপায় রয়েছে তার মধ্যে এফিলেট মার্কেটিংও অন্যতম একটি উপায়। এফিলিয়েট মার্কেটিং মূলত বিশেষ এক ধরনের মার্কেটিং যেখানে বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করার বিনিময়ে একটা নির্দিষ্ট এমাউন্টের কমিশন নেওয়া কে বোঝায়। এখানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের বিভিন্ন প্রোডাক্টের জন্য এফিলিয়েট কমিশন প্রদান করে। কোন মার্কেটার যদি সেই প্রতিষ্ঠানের এফিলিয়েট কমিশন যুক্ত প্রোডাক্ট নিয়ে অনলাইনে মার্কেটিং করে বিক্রি করে তাহলে সেখান থেকে নির্দিষ্ট এমাউন্টের কমিশন পায়। এফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে amazon.com, ebay.com, aliexpress.com, envato.com ইত্যাদি। 

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads