বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা (pdf)

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা সম্পর্কে আমাদের আজকের আয়োজন। আশাকরছি শিক্ষার্থী বন্ধুদের জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা টি বেশ সহজ এবং সাবলীল হবে। বর্তমানে রচনাগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি রচনা। অ্যাসাইনমেন্ট এর জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা পরীক্ষায় ভালো করতে চাচ্ছো তারা আমাদের লিখিত এই রচনাটি অধ্যায়ন করতে পারো। আশা করছি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনাটি তোমাদের কাছে ভালো লাগবে। গুরুত্বপূর্ণ রচনা গুলো পেতে এখানে ক্লিক করো। 

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা  ভূমিকা: বিশ্ব মানচিত্র বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ ।কিন্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সহজে একদিনে আসেনি । 2 লক্ষ মা-বোনের ইজ্জত  আর  30 লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে সুদীর্ঘ 9 মাসের রক্ত কহি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে স্বাধীনতা । 

মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটঃ ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর পাকিস্তানের একটি অংশ হিসেবে বাঙালিরা পূর্ব পাকিস্তান লাভ করে । কিন্তু পশ্চিম পাকিস্তানীরা তাদের দুঃশাসন, শোষণ, বঞ্চনার মাধ্যমে এদেশকে পাকিস্তানের একটি উপনিবেশে পরিণত করে । কিন্তু বাঙালি রা তা মেনে নেয়নি ।১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন ও ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে তারা তাদের জাতীয়তাবাদের প্রথম বিজয় সূচনা করে । তারপর অনুষ্ঠিত  হয় ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন ও ১৯৬৬  সালের ছয় দফা আন্দোলন ।১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন 6 দফার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে । বাংলার মানুষের এই বিজয় কে কেন্দ্রীয় সরকার নস্যাৎ করার ষড়যন্ত্র করে । ক্ষমতা হস্তান্তর না করে তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সঙ্গে আপোষ আলোচনার মাধ্যমে  প্রহসন চালায় । বাঙালি জাতি কে চিরতরে ধ্বংস করার জন্য সেনাবাহিনী আক্রমণ চালায় এদেশের সাধারণ মানুষের উপর ।

পাক বাহিনী আক্রমণঃ বাংলাদেশের মানুষের দেশ প্রেম ও স্বাধীনতার স্বপ্নকে নস্যাৎ করার জন্য পাক হানাদার বাহিনী আধুনিক মারণাস্ত্র সজ্জিত হয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরীহ বাঙালির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । শুরু হয় ঢাকার বুকে ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা নির্মম হত্যাকাণ্ড । পাকিস্তানি সৈন্যদের হাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 25 শে মার্চ রাতে গ্রেফতার হন । তাকে নিয়ে যায় পাকিস্তানের করাচিতে । শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ , শত্রুর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এদেশের সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে সকল পেশার মানুষ এই যুদ্ধকে মোকাবেলা করে ।

আরো পড়ুনঃ গুরুত্বপূর্ণ উৎসব রচনা

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠনঃ  ১৯৭১  সালের 10 এপ্রিল কুষ্টিয়ার মুজিবনগরে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হয় । রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম , প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ , পররাষ্ট্রমন্ত্রী খন্দকার মোশতাক আহমেদ , অর্থমন্ত্রী

মনসুর আলী , স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন কামরুজ্জামান । কর্নেল এম এ জি ওসমানী প্রধান সেনাপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয় ।

মুক্তিবাহিনী গঠন ও যুদ্ধের পরিস্থিতিঃ পাক হানাদার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে জীবন বাঁচাতে লক্ষ লক্ষ নারী পুরুষ প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতে আশ্রয় নেয় । তাদের মধ্যে থেকে জেনারেল ওসমানী একটি  বিরাট গেরিলা বাহিনী গঠন করা হয় । বিমান বাহিনী গঠন করা হয় আক্রমণ শুরু হয় জলে-স্থলে ও আকাশে সর্বত্র । 

স্বাধীনতার ঘোষণাঃ  25 শে মার্চ কাল রাত্রিতে পাকবাহিনী হত্যাযঙ্গে সারা বাংলাদেশের মানুষ বিক্ষোভ ফেটে পড়ে । এমনি অবস্থায় গ্রেপ্তারের আগে মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন তা ওয়ালেট এর মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়ে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে থেকে পাঠ করলে সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় । এই ঘোষণা শোনার পর পরেই সেনাবাহিনী বাঙালির সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ ঝাঁপিয়ে পড়ে । আর এভাবেই সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রাম গড়ে ওঠে ।

মুক্তিবাহিনী ও মিত্র বাহিনীর যৌথ আক্রমণঃ ১৯৭১ সালের নভেম্বরের শেষের দিকে মুক্তিযুদ্ধ তীব্রতার হয়ে ওঠে । ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তান ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে । ৪ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিবাহিনী ভারতীয় বাহিনী যৌথভাবে হানাদারদের বিরুদ্ধে লড়তে শুরু করে । ৬ ডিসেম্বর ভারত  আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দান করে । ৪ ডিসেম্বর  থেকে ১২ ডিসেম্বর মধ্যে বাংলার পাকবাহিনী সবগুলো বিমান হারায় । মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী যৌথ আক্রমণে ১৩ ডিসেম্বর মধ্যে  বিভিন্ন এলাকা শত্রুমুক্ত হয় , বাংলাদেশের সর্ব প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা  যশোর ।

আরো পড়ুনঃ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস রচনা

আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিঃ ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ এশিয়ার দুই দেশ ভুটান ও ভারত পর্যায়ক্রমে সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দান করে । স্বীকৃতির কয়েক ঘন্টা পরে বেলা ১১ সময় অল ইন্ডিয়া রেডিও  মারফত ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দান করে এবং সরকারের পক্ষে থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয় বাংলাদেশ সম্পর্কে কূটনীতিক স্বীকৃতি ।

মুক্তিযুদ্ধে বৈদেশিক সাহায্য- সহযোগিতাঃ  বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কয়েকটি বিদেশি রাষ্ট্র বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । পাক বাহিনীর অত্যাচারে প্রায় এক কোটি বাঙালি ভারতে আশ্রয় নেয় । ভারত সরকার এইসব খাদ্য, বস্ত্র , ওষুধ দিয়ে সাহায্য করে । রাশিয়া সহ পূর্ব ইউরোপীয় সহযোগিতার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী পাক বাহিনীর নির্যাতন ও হত্যার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলে । এ সময় আমেরিকা চীন দুই দেশ পরাশক্তি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলেও তাদের জনগণ বাংলাদেশের জনগণের ন্যায্য দাবির প্রতি একাত্মতা ঘোষণা করে। অবশেষে বৈদেশিক সাহায্য মুক্তিবাহিনীর নিরালায় নয় মাসে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় ।

মুক্তিযুদ্ধ চেতনাঃ  মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ উদ্দেশ্য বর্ণনা থেকে পূর্ববঙ্গের সাধারণ মানুষের জন্য স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে  যে নীতিগুলো একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যাপারটি ১৯৭১  সালের সাথে সাথে শেষ হয়ে যায় না । বরং বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি যতদিন পর্যন্ত টিকে থাকবে ততদিন পর্যন্ত  রাষ্ট্র, সরকার জনগণের মধ্যে  চর্চার ব্যাপারটি অব্যাহত রাখার আবশ্যিকতা আছে । আমাদের মনে রাখতে হবে স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন ।

পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণ ও চূড়ান্ত বিজয়ঃ  ১৪  ডিসেম্বর যৌথবাহিনী ঢাকায় অবস্থান করে এবং 16 ই ডিসেম্বর হানাদার বাহিনীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজী তার ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে অস্ত্রশস্ত্র সহ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যৌথ কমান্ডের নিকট আত্ম সম্পন্ন  করে । ফলে বাংলা বাংলাদেশে চূড়ান্ত অর্জন ইতিহাস বুকে একটি জন্ম নেয় নামটি হয় বাংলাদেশ ।

আরো পড়ুনঃ স্বাধীনতা দিবস রচনা

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা  উপসংহারঃ  আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার, আমাদের বীরত্বের প্রতীক । বাংলার বীর সন্তানেরা এই মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জন করেছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা ও লাল সবুজের পতাকা , স্বাধীনতার চার দশক ও আমাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটে নি । তারপরও সফল ব্যর্থতা ও গ্লানি মুছে ফেলে সুখী সমৃদ্ধি দেশ হিসেবে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে । এটা সকলের কামনা । আজ বাংলার মানুষ স্বপ্ন দেখেছে নতুন প্রভাতের , নতুন জাগরণের , নতুন সূর্যের ।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা (pdf download)

আজকের আয়োজনে শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ রচনা টি যদি তোমাদের কাছে ভালো লাগে তাহলে এটিকে ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটে শেয়ার করতে পারো। আরো গুরুত্বপূর্ণ রচনা গুলো পেতে এখানে চাপ দাও। 

manik

আমার নাম মানিক প্রামানিক। বর্তমানে আমি সিটি ইউনিভার্সিটি তে EEE বিষয়ে বিএসসি তে অধ্যায়নরত রয়েছি। টেকনোলজির প্রতি আমার বিশেষ দুর্বলতা রয়েছে । লেখালেখি করতে আমার ভালো লাগে। অবসর সময়ে বই পড়তে ভালোবাসি।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads