বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে আমরা কিভাবে ঘরে বসে নিজে নিজে একাউন্ট খুলতে পারি কিন্তু কিন্তু বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য নিজে নিজে ঘরে বসে সম্ভব নয় । বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন রয়েছে । আজকে আমরা বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করব। যেহেতু ঘরে বসে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম চালু নেই তাই এক্ষেত্রে আপনাকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট কিভাবে নিতে হয় সে ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে হবে।  যেহেতু আমাদের দেশে ব্যবসায়ী ভাইদের মাঝে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট কিভাবে নিতে হয় সে ব্যাপারে কত হল রয়েছে তাই ভাবলাম এ বিষয়ে একটা আর্টিকেল লিখে দেই।  তাহলে হয়তো আমার ব্যবসায়ী ভাইদের উপকার হবে । 

আমরা জানি যে একটি বিকাশ এজেন্ট একাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করলে কোম্পানী কর্তৃক একাউন্টের কমিশন এবং সুবিধা থেকে মোটা অংকের ইনকাম করা যায়। তো চলুন বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জেনে নেই। যদি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলে ইনকাম করতে চান তাহলে, বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগে, বিকাশ এজেন্ট হওয়ার শর্ত, বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগবে, সর্বোপরি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ভালোভাবে জানতে হবে।

আরো পড়ুনঃ 

আজকের আর্টিকেলে আমরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কিভাবে বিকাশ এজেন্ট হতে হয় অথবা বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম এবং এ সংক্রান্ত সকল বিষয়ে আলোচনা করব। 

সূচিপত্রঃ 

  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগবে
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২২ | bKash Agent Registration
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে?
  • বিকাশ এজেন্ট কমিশন | bkash agent profit
  • বিকাশ এজেন্ট থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম
  • বিকাশ এজেন্ট লিমিট
  • বিকাশ এজেন্ট এর সুবিধা
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে FAQ
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগবে

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য কি কি লাগবে তা নিচে দেওয়া হল-

  •  প্রথমতঃ  বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট হওয়ার জন্য নূন্যতম একটি দোকান থাকতে হবে।  অবস্থান নেবেন সেখানে বিকাশের এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য উপযুক্ত স্থান হতে হবে এবং চাহিদা ভালো থাকতে হবে। 
  • দ্বিতীয়তঃ  ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হবে।  যে দোকানে ব্যবসা করছেন সে দোকানের একটি ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে।  যদি না থাকে সে ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ,  সিটি কর্পোরেশন  থেকে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। 
  • তৃতীয়তঃ  জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স কিংবা পাসপোর্ট এর  রঙিন ফটোকপি
  • চতুর্থতঃ  সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ছবি
  • পঞ্চমতঃ  একটি সচল সিম যেটাতে আগের কোন বিকাশ একান্ট খোলা নেই। 
  • ষষ্ঠতঃ  একটি টিন সার্টিফিকেট 


বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২২ | bKash Agent Registration

যদি উপরে উল্লেখিত ডকুমেন্ট অথবা শর্তাবলী পূরণ করতে পারেন তাহলে কিভাবে বিকাশ এজেন্ট নিতে হয় সে ব্যাপারে তিনটি উপায় রয়েছে। যদি আপনিও প্রতিষ্ঠিত দোকান থাকে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকে তাহলে নিচে বর্ণিত তিনটি উপায়ে এর যেকোনো একটি মাধ্যমে আপনি বিকাশ এজেন্ট নিতে পারবেন। নিচে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২২  তিনটি বর্ণনা করা হলো। 

  • ক. সার্ভিস পয়েন্ট থেকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
  • খ.  মার্কেটিং অফিসার কর্তৃক বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম
  • গ.  অনলাইনে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম

ক. সার্ভিস পয়েন্ট থেকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সার্ভিস পয়েন্টে জমা দিতে হবে। অপেক্ষাকৃত পত্র জমা দেওয়ার পর কিছুদিনের মধ্যেই আপনার দোকানে বিকাশ মার্কেটিং অফিসার যোগাযোগ করবে।  যদি তারা মনে করে যে আপনার দোকানে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট চালু করা সম্ভব তাহলে আপনাকে তারা অ্যাকাউন্ট খুলে দেবে। 

খ. বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম জানা সম্পর্কে যদি আপনার অনীহা থাকে অথবা যদি তেমন কোন ঝামেলায় যেতে না চান তাহলে মার্কেটিং অফিসার কর্তৃক বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে পারেন। 

এর জন্য আপনাকে আপনার এলাকায় কোন বিকাশ এজেন্টের দোকান রয়েছে কিনেছে সেটা দেখতে হবে এবং তার কাছ থেকে বিকাশ প্রতিনিধির মোবাইল নম্বর নিয়ে তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে ।  অথবা আপনি বিকাশের হেল্পলাইন নাম্বার 16247 নাম্বারে যোগাযোগ করে আপনার এলাকার ঠিকানা দিয়ে বিকাশ প্রতিনিধির নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করতে পারবেন। 

পরবর্তীতে বিকাশ প্রতিনিধি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে আপনাকে বলবে অথবা প্রয়োজনের কাজ শেষ করে দিবে। 

গ. অনলাইনের মাধ্যমেও বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য আবেদন করা যায়।  এর জন্য bikash.com এর নিজস্ব ওয়েবসাইটে একটা নির্দিষ্ট ফরম পূরণ করতে হবে।  ফরমটি পূরণ করার জন্য এই লিংকে ক্লিক করুন। 

এই ফর্মে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী সঠিকভাবে পূরণ করুন।  এখানে যে সকল তথ্য চাওয়া হবে তা হচ্ছেঃ  জিনিয়াস হতে চাচ্ছেন তার পূর্ণ নাম অবশ্যই ভোটার আইডি কার্ড অনুযায়ী,  জাতীয় পরিচয় পত্রের নাম্বার,  ট্রেড লাইসেন্স নাম্বার,  যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নং,  দোকানের নাম,  ইমেইল আইডি এবং দোকানের ঠিকানা। 

অনলাইনে আপনার ফরম পূরণ করার পর বিকাশ প্রতিনিধি আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে এবং আপনার প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী যাচাই-বাছাই করে তারা সিদ্ধান্ত নিবে যে আপনাকে বিকাশ এজেন্ট করা যায় কিনা।  যদি ভেরিফিকেশনে আপনার সবকিছু ঠিকঠাক থাকে তাহলে এক মাসের মধ্যেই আপনি বিকাশ এজেন্ট নিতে পারবেন। 

এবার জানবো বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কত টাকা লাগে? 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য নির্দিষ্ট করে কোন টাকার পরিমাণ এর কথা বলা নেই।  তবে ডেইলি ট্রানজেকশন ক্যাশ ইন ক্যাশ আউট ইত্যাদি করার জন্য একটা ন্যূনতম অ্যামাউন্ট প্রথমদিকে ব্যালেন্স রাখতে হবে।  

যেহেতু বিকাশ এজেন্ট সিম থেকে সেন্ড মানি করতে হবে বা ক্যাশ ইন করতে হবে  এর জন্য ব্যালেন্সে টাকা রাখতে হবে পাশাপাশি ক্যাশ আউট করার জন্য কেসে টাকা থাকতে হবে। 

যদি আপনার দোকানের বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর লেনদেন ভালো হয় সেক্ষেত্রে আপনার ব্যালেন্স বেশি লাগবে এটাই স্বাভাবিক।  আনুমানিক ভাবে বলতে পারি যদি গ্রামাঞ্চলে দোকান হয় সেক্ষেত্রে হয়তো বা 50 হাজার টাকা হলেও চলবে কিন্তু শহরাঞ্চলে জনম কোলাহলময় জায়গায় দোকান করলে অবশ্যই তিন থেকে দশ লক্ষ টাকার মতো প্রয়োজন হতে পারে। 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট ধরে রাখার শর্ত:

  • প্রতিদিন মিনিমাম ২০০০ টাকা লেনদেন করতে হবে
  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্টে সবসময় ৭০০০ টাকার বেশি থাকতে হবে।
  • প্রতিমাসে মিনিমাম ৫টি বিকাশ পার্সোনাল একাউন্ট খুলতে হবে

বিকাশ এজেন্ট কমিশন কেমন পাওয়া যায়। bkash agent profit

  • বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গ্রহণ কিংবা পার্সোনাল একাউন্টে টাকা পাঠানো উভয় ক্ষেত্রে কমিশন পাওয়া যায়। 
  •  যদি *247#  ডায়েল করে টাকা পাঠানো হয় সে ক্ষেত্রে প্রতি হাজারে 4.10 টাকা কমিশন দেওয়া হয়। 
  • বিকাশ এজেন্ট অ্যাপ দিয়ে প্রতি 1000 টাকা ট্রানজেকশন এ কমিশন পাওয়া যায় 4.30 টাকা। 
  • এছাড়াও যদি শতকরা 90% ট্রানজেকশন অ্যাপ দিয়ে করা হয় সে ক্ষেত্রে কমিশন হবে 4.50 টাকা। 

বিকাশ এজেন্ট থেকে টাকা পাঠানোর নিয়ম

যদি আপনি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট তুলতে সক্ষম হন সেক্ষেত্রে বিকাশ প্রতিনিধি আপনাকে কিভাবে টাকা পাঠাবেন সে ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দিয়ে দিবে। *247#  ডায়াল করে কিংবা বিকাশ অ্যাপ দিয়ে কিভাবে টাকা পাঠাবেন অথবা কিভাবে টাকা আনবেন সবকিছু সম্পর্কে বিকাশ থেকে বিকাশ এজেন্ট প্রতিনিধিদেরকে এক দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়  সেখান থেকে সবকিছু শিখে নিতে পারবেন। 

বিকাশ এজেন্টের লিমিট আছে কিনা?

বিকাশ এজেন্টের বেলাও কিছু লিমিটেশন রয়েছে যেমনঃ

  • বিকাশ এজেন্ট থেকে কোন নাম্বারে সর্বোচ্চ 30 হাজার টাকা পাঠানো যায় এর চেয়ে বেশি পাঠানো সম্ভব নয়। 
  • বিকাশ এজেন্ট নাম্বার থেকে একটি পার্সোনাল নাম্বারে সর্বোচ্চ 5 বার পাঠানো যায়। 
  • কোন পার্সোনাল নাম্বার থেকে বিকাশ এজেন্ট নাম্বারে টাকা ক্যাশ আউট করতে চাইলে সর্বোচ্চ 30 হাজার টাকা করা যায়। 

পার্সোনাল নাম্বার থেকে বিকাশ এজেন্ট নাম্বারে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ 5 বার একই নাম্বারে টাকা পাঠানো যায়। 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এই লিমিটেশন ছাড়া আর তেমন কোনো লিমিটেশন নেই। 

বিকাশ এজেন্ট এর সুবিধা ।  বিকাশ এজেন্টের ব্যবসায় লাভ কেমন

যেহেতু একজন বিকাশ এজেন্ট ব্যবসায়ী আগে থেকে দোকান থাকে সেহেতু একটা দোকান চালানোর পাশাপাশি বিকাশ চালালে অতিরিক্ত ইনকামের সুযোগ রয়েছে।  যদি একজন বিকাশ এজেন্ট প্রতিদিন মিনিমাম 1 লক্ষ টাকা ট্রানজেকশন করতে পারেন সে ক্ষেত্রে প্রতি 1 লক্ষ টাকা ট্রানজেকশন 450 টাকা ইনকাম হবে।  এভাবে যদি প্রতিমাসে প্রতিদিন এক লক্ষ টাকা করে ট্রানজেকশন করা যায় তাহলে বেশ মোটা অংকের একটা ইনকাম আসে।  

এছাড়া প্রতি মাসে প্রতিদিন এক লক্ষ টাকা করে ট্রানজেকশন করতে পারলে কোম্পানি কর্তৃক 12 হাজার 300 টাকা কমিশন দেওয়া হয়।  এভাবে করে কোম্পানী কর্তৃক বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা বা বোনাস গ্রহণের মাধ্যমে বাড়তি ইনকাম এর সুযোগ রয়েছে। 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এ টাকা পাঠানো বা টাকা আনার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বিল পেমেন্ট এর মাধ্যমে অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ রয়েছে।  যেমন বিদ্যুৎ বিল,  গ্যাস বিল,  ইত্যাদি । 

বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম নিয়ে শেষ কথা

আশা করছি আজকের আলোচনার মাধ্যমে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন।  শেষ করার আগে একটা কথা বলে রাখতে চাই।  যেহেতু বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট এর ব্যবসায়  প্রচুর টাকা-পয়সা লেনদেনের ব্যাপার স্যাপার রয়েছে তাই এখানে আপনাকে অবশ্যই বাড়তি সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।  আমরা প্রায়শই বিভিন্ন ধরনের নিউজ পোর্টালের শুনতে পাই যে প্রতারক কিভাবে বিকাশের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।  অবশ্য এ ব্যাপারে আপনাকে প্রশিক্ষণের সময় সবকিছু শিখিয়ে দেয়া হবে এবং সতর্ক করে দেওয়া হবে।

তাই শেষ পর্যন্ত একটা কথাই বলবো বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন। 

শাহীন

আমার নাম মোঃ শাহীনুর ইসলাম । সবাই শাহীন বলে ডাকে। ব্যবসা সংক্রান্ত আলোচনা এবং টেকনোলজি নিয়ে পড়ে থাকতে ভাল লাগে। আমি চাই এই ব্লগের মাধ্যমে আপনাদের বিভিন্ন তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads