অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম
অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম।কোভিড নাইনটিন এর কারণে যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি তাই শিক্ষাকে শিক্ষার্থীদের নিকট পৌঁছানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা  হয়েছে |যে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছিল তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি  অ্যাসাইনমেন্ট| এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যেমন বাড়িতে বসে পড়াশোনার সাথে জড়িত ছিল এবং সৃষ্টিশীলতার বিকাশ ঘটেছিল| কিন্তু যেহেতু এসাইনমেন্ট বাড়িতে বসে লিখতে হয় এবং তথ্য নেওয়ার যথেষ্ট উৎস থাকে তাই সেটাকে  গ্রহণযোগ্য মানতে নারাজ|  অনেক শিক্ষার্থী শুধু না  বুঝে অন্যেরটা   কপি করার সুযোগ থাকে , তারপরেও সেটা উদ্দেশ্য নয়| যারা নিজের মধ্যে সৃষ্টিশীলতাকে তৈরি করতে চায় তাদের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট আশীর্বাদ|

কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যারা এসাইনমেন্ট কি এ সম্পর্কে কোন ধারণা রাখেন না| আবার অনেকে হয়ত জানেন এসাইনমেন্ট কি কিন্তু কিভাবে লিখতে হয় সেটা জানেন না| যাই হোক এই আর্টিকেলে আজকে আমরা এসাইনমেন্ট তৈরি করার নিয়ম সম্পর্কে জানব|

অ্যাসাইনমেন্ট কি?

অ্যাসাইনমেন্ট হলো একটি কাজ বা কাজের অংশ যা দেওয়া হয় মূলত পড়াশোনার অংশ হিসেবে।অ্যাসাইনমেন্টের সাথে লিখিত কাজ এবং ব্যবহারিক কাজও জড়িত।

  • অ্যাসাইনমেন্ট হ’ল শিক্ষার্থীদের ঘরে বসে দেওয়া কাজের একটি অংশ।
  • অ্যাসাইনমেন্ট হ’ল একটি কাজ যা কাউকে দেওয়া হয়, সাধারণত তাদের কাজের অংশ হিসাবে।

প্রয়োজনীয় সামগ্রী 

  1. একটি স্কেল
  2. একটি পেন্সিল
  3. একটি কালো বলপয়েন্ট কলম
  4.  A4 সাইজের কিছু কাগজ নাও

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়মঃ 

  1.  A4 সাইজের কাগজের একপাশে লিখবে (কোনো ক্রমেই উভয় পাশে লিখবে না)
  2. স্পষ্ট করে লেখার চেষ্টা করবে
  3. লেখার ভিতরে কাটা-কাটি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখবে
  4.  প্রশ্নের সিরিয়াল ঠিকরেখে লিখবে

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার স্পেশাল টিপস

  1. অ্যাসাইনমেন্ট ছোট ছোট বাক্যে লেখ উত্তর| এতে  শিক্ষকগণের বুঝতে সুবিধা হয়
  2. পরিচিত শব্দ ব্যবহার করুন
  3. সন্দেহজনক  বানান পরিহার করা ভালো
  4. বেশি  কাটাকাটি না করাই উত্তম, কেননা এতে এসাইনমেন্ট দেখতে খারাপ লাগে
  5. এ ফোর সাইজের কাগজের একপাশে অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর লিখতে হবে। উভয়পাশে লেখা যাবে না। চারিপাশে দাগ টেনে মাঝে লিখতে হবে। কালো কালির কলম ব্যবহার করতে হবে। 
  6. প্রথমে প্রশ্ন তুলে তারপরে প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে। 

কিভাবে এ্যাসাইনমেন্ট লেখা শুরু করবোঃ

এবার এসো A4 সাইজ পেইজ নিয়ে পেন্সিল দিয়ে সুন্দর করে মার্জিন করে ফেলি। কালো বলপয়েন্ট কলম দিয়ে লেখা শুরু করি। “এ্যাসাইনসেন্ট -০১” লিখে নিচে প্রথমে “ক” শেষ করে তারপর “খ” তারপর “গ” ধারাবাহিকভাবে আমরা পেইজের একপাশেই লিখি। অন্য পাশে খালি রাখি। একটা দাগ বা পেইজের পাশে কোনো ফুল বা পাপড়ি আঁকার প্রয়োজন নাই ।

লেখা শেষ হলে পূরণ করা কাভার পেইজের (এসএসসি ও এইচএসসি/সমমান শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর প্রদত্ত প্রদত্ত কভার পেজ ব্যবহার করতে হবে। এই কভার পেজ আমাদের সাইটেও দেয়া আছে) সাথে এই লেখাগুলো পিনআপ করে নাও। তোমার একটা এসাইনমেন্টের প্রস্তুত হয়ে গেলো।

অ্যাসাইনমেন্ট কভার পেজ

অ্যাসাইনমেন্ট  কাভার পেইজে ৩টা অংশ :

  •  প্রথম অংশ শিক্ষার্থী পূরণ করবে
  •  দ্বিতীয় অংশ মূল্যায়নকারী শিক্ষক পূরণ করবে
  •  তৃতীয় অংশ প্রতিষ্ঠান পূরণ করবে

মনে রাখতে হবে কাভার পেইজ এর তিনটা অংশই ইংরেজীতে পূরণ করতে হবে।

এ্যাসাইনমেন্টের ক্রমিক নম্বর :

তুমি যে এ্যাসাইনমেন্টেটি তৈরি করবে, সেই বিষয়ের প্রথম ঘরেই ক্রমিক নম্বর দেওয়া আছে। “বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা” প্রশ্নে দেখো এর প্রথম ঘরেই এ্যাসাইনমেন্ট নম্বর ১ লেখা আছে । তাহলে তুমি ক্রমিক নম্বরে লিখবে, ১। কারণ তুমি ১ নম্বর শুরু করছো‌। যদি ২ হয়,তাহলে লিখবে ২। (এটা ইংরেজীতেই লিখবে)

এ্যাসাইনমেন্টের শিরোনামঃ

 তুমি যদি “বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা” শুরু করো, তাহলে শিরোনাম পয়েন্টে লেখা আছে, ‘ ইতিহাস পরিচিতি ‘। কাজেই তোমার শিরোনামে এই লেখাটি লিখতে হবে।

বিষয় কোড ও বিষয়ের নামঃ

এটা তোমার এ্যাসাএনমেন্টে এবং তোমার রেজিস্ট্রেশন কার্ডে লেখা আছে।” বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা” হলে লিখবে বিষয় কোড “153”। (এটা ইংরেজীতেই লিখবে)

অ্যাসাইনমেন্ট এর জন্য কভার পেজ লিখা খুব জরুরি। কভার পেজটি সুন্দর করে লিখতে হবে। এখানে কভার পেজের একটি নমুনা তুলে ধরা হলো|অ্যাসাইনমেন্ট কভার পেজ স্কুলের জন্য

এই বিষয়গুলো সুন্দর অক্ষরে স্পষ্ট করে লিখতে হবে। তবে হাতে না লিখে কম্পিউটার দিয়ে ডিজাইন করেও নেয়া যায়।  তাতে কভার পেজটা আরো সুন্দর ও আকর্ষণীয় হবে। খাতার উপর প্রতিষ্ঠানের লোগো থাকাও উচিত।

অ্যাসাইনমেন্ট সাধারনত তিনটি ভাগে লিখতে হয়।

  • প্রথম ভাগে ভূমিকা দিতে হয়
  • তারপর মূল অংশ
  • সবশেষে উপসংহার দিতে হয়।

ভূমিকা অংশে

অ্যাসাইনমেন্টের বিষয়টি নিয়ে সংক্ষিপ্ত ধারনা দিতে হয়। এই অংশটি পড়ে শিক্ষক বা পাঠক পুরো বিষয়টির উপর একটি স্বচ্ছ ধারনা পায়। কাজেই এটি হতে হবে সহজ বোধগম্য।

মূল অংশ

এখানে বিষয়বস্তুর উপর বিশদ বিবরণ দেয়া হবে। খুব সুন্দর ও সহজ ভাষায় পুরো বিষয়বস্তু বর্ণনা করতে হবে যেন শিক্ষক বা পাঠক সহজেই ধারনা পায় বিষয়টি সম্পর্কে। অ্যাসাইনমেন্ট এর বিবরণ গোছানো থাকতে হবে। প্রয়োজনীয় সকল তথ্য থাকতে হবে।খাতায় লেখার সময় হাতের লেখা যেন সুন্দর হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে কাটাকাটি বা ঘষামাজা যেন না হয়।

উপসংহার

অ্যাসাইনমেন্ট এর এ অংশে আলোচ্য বিষয়ের উপর ইতি টানতে হবে। বিষয়টির ফলাফল সম্পর্কে বলে শেষ করতে হবে।

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম বা ধাপ সমূহ

১। একটি কভার পেজ থাকবে, পেজটি ফর্মাল ডিজাইনের হলে ভাল হয়।

২। কভার পেজে সাবজেক্ট অনুযায়ী একটি লোগো থাকবে।

৩। কভার পেজে উপরের দিকে বড় স্পষ্ট বিষয় লেখা থাকবে, এটি অর্ধচন্দ্রাকৃতির হলে ভাল দেখাবে তবে সাধারন সোজা হলে কোন সমস্যা নাই।

৪। নিচের দিকে নাম, শ্রেণী রোল, বইয়ের নাম ইত্যাদি থাকবে।

৫। এসাইনমেন্ট এর লাস্টে একটি ফাকা সাদা পেজ থাকবে।

৬। আদর্শ এসাইনমেন্ট বিশেষ পলিপ্লাস্টিক মলাট দ্বারা বাধায় করতে হয়। (তবে বাধ্যতামূলক নয়)

৯। কোন একক বিষয়ে এসাইনমেন্ট ছোট লিখলেও ৭-৮ পৃষ্ঠার বেশি লিখতে হয়। আর আদর্শ এসাইনমেন্ট আরও বড় ২০-৫০ পেজও হতে পারে। তবে ছাত্রছাত্রীদের সিলেবাস নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে বলে অযথা বড় করা ঠিক নয় তবে বিভিন্ন প্রশ্ন টপিক বড় ব্যাখ্যায় লিখতে হবে।

১০। অ্যাসাইনমেন্ট সাধারণত বিভিন্ন স্টাইলের অক্ষর এ না লিখে সাধারণ সুন্দর    অক্ষর দিয়ে লেখাই যুক্তিপূর্ণ

১১। এসাইনমেন্ট এর তথ্যের উৎস যেকোন কিছু হতে পারে যেমন, বই, গল্পের বই, উপান্যাস, কাব্যগ্রন্থ, ইন্টারনেট ইত্যাদি হতে পারে, তবে হুবুহ কপি করা যাবেনা। উৎস পড়ে যা বুঝবেন সেটিই লিখতে হবে। উপদেশ মুলক বানী কোন ব্যক্তি বা লেখকের কথা এখার সময় ডাবল কোটেশনে লিখতে হয়।

১২। এসাইনমেন্ট কাগজের এক পাশে লিখতে হবে। অর্থাৎ বইয়ের মত মেলালে লেখা শুধু ডান পাশে থাকবে। বাম পাশে থাকবেনা। মানে পৃষ্ঠার তলার পাশে লেখা যাবেনা।

১৩। বড় বড় ক্ষেত্রে এসাইনমেন্ট হাতে লিখে মডেল তৈরি করে পরে হুবু সেটা টাইপ করে প্রিন্ট করে বাধাই করে জমা দিতে হয়। কিন্তু এখানে যেহেতু ছাত্রছাত্রীদের পরিক্ষার বিকল্প তাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ছাত্র ছাত্রীকে নিজ হাতে কাল বলপয়েন্ট দিয়া লিখতে হবে। অর্থাৎ প্রিন্ট করা যাবেনা

১৪। নিজে নিজে খুজে বের করে লিখবেন। অন্য কেউ লিখে দিতে পারবেনা।

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার অনেক উৎস থাকে, এবং শিক্ষার্থীরা সেটার যথেষ্ট অপব্যবহার করে থাকে, অর্থাৎ  ইউটিউব ভিডিও দেখে অথবা গুগলে সার্চ করে এসাইনমেন্ট লিখে থাকে| কিন্তু শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা এবং মেধা বিকাশে আমি প্রত্যেককেই এই বিষয়ে পরামর্শ দিব যে আপনারা কখনোই অন্যেরটা নকল করবেন না| নিজের মত করে লিখুন| আর এটাই হচ্ছে এসাইনমেন্ট| হ্যাঁ তবে উৎসগুলোর সাহায্য নিতে পারেন| কিন্তু নকল করা থেকে বিরত থাকলে ভবিষ্যতে এটা ফলাফল আপনি পাবেন| 


শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads