রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কি না তা জেনে নিন

রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কি না তা জেনে নিন

 রোজা থাকা অবস্থায় সহবাস করা যাবে কিনা তা জানি

রমজান মাসে আমরা অনেকেই বিভিন্ন ধরনের  চিন্তা ভাবনা করে থাকি । যেমন রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কিনা।  অনেকের মনে এইসব চিন্তা ভাবনা এসে যায়। আমাদের মুসলিমদের অনেকের মনে এসব চিন্তা করে যেমন রমজান মাসে স্ত্রী সহবাস করা পাপ বা গুনাহ একটি কাজ আবার অনেকেই মনে করে রমজান মাসে সহবাস করা যাবে না ইত্যাদি। তাই আজকে বলব আসলেই  সত্যটা কি ।  তাই আজকের এই  আলোচনাতেই এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

 তাহলে চলুন দেখে নেই বা পরেরটি রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কিনা।
  • রমজান মাসে সহবাস করা যাবে কি না  তা জেনে নিন।
  • সহবাস সম্পর্কে কিছু কুসংস্কার কথাবার্তা।
  •  সহবাসের ক্ষেত্রে কিছু  নিষিদ্ধতা
  •  সহবাসের পর গোসল না করে সেহরি খেলে রোজা হবে কিনা
  •  সহবাসের সময় স্বামী-স্ত্রীর যে দোয়াটি পড়তে হবে 
  •  শেষ কথা রমজান মাসে সহবাস করা যাবে কিনা তা জেনে নিন

রমজান মাসে সহবাস করা যাবে কি না  তা জেনে নিন।রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কি

মহান আল্লাহতালা বান্দাদেরকে বলে দিয়েছেন রমজান মাসে সহবাস করা যাবে। মহান আল্লাহতালা তাদেরকে রমজান মাসে রাতে স্ত্রী সহবাস করা বা রমজান মাসে তোমাদের কাছে যাওয়া মহান আল্লাহতালা হালাল করে রেখেছেন। কারণ তোমাদের জন্য রমজান মাসে সহবাস করা হালাল করে দিয়েছি মহান আল্লাহতালা হুকুম।  রমজান মাসে সহবাস নিয়ে মহান আল্লাহতালা হালাল করে রেখেছেন এজন্য এতে কোন গুনা নেই । আল্লাহতালা বলেছেন তোমরা সহবাসের সময় মিলিত হও।
মহান আল্লাহতালা প্রতিটা কাজের নিয়ম করে রেখেছেন তাই আমাদের নিয়ম মেনে চলতে হবে রমজান মাসে দিনের বেলায় সহবাস করা হারাম তা জানিয়ে দিয়েছেন।  এবং রমজান মাসে রাতে সহবাস করা হালাল করে দিয়েছেন। কিন্তু মহান আল্লাহতালা এই কথাও বলে রেখেছেন যে রমজান মাসে দিনের বেলা স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে আদর সোহাগ চুম্বন মদন করতে পারবে।  অর্থাৎ   বীর্যপাত ও সহবাস ব্যতীত স্বামী স্ত্রীকে উপভোগ করা জায়েজ। 
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন যে,  নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোজা রেখে স্ত্রীকে চুম্বন করবেন, স্ত্রীর সাথে  মুবাশারা  আলিঙ্গন করতেন। তিনি ছিলেন সবচেয়ে সক্ষম ব্যক্তি তা হলো যৌন চাহিদা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে। 

 রমজান মাসে আমাদের উচিত নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখা। আবার অনেকেই মনে করে যে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না তাহলে তারা এসব কাজ থেকে দূরে থাকতে পারেন।  তবে কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা থেকে দিনের বেলায় সহবাস করে তাহলে তাকে অবশ্যই এই ভুলের জন্য কাফফারা দিতে হবে কাফফারার অর্থ হলো ২ মাস তথা ৬০ দিন রোজা রাখতে হবে। যদি আপনি এই কাজটি না করতে পারেন তাহলে স্বামী-স্ত্রীর উভয়কে সাতজন করে 120 জন কে খাওয়াতে হবে। এই সব যদি না করা হয় তাহলে আপনি যদি সারাজীবন রোজা রাখেন আপনার রোজা পূর্ণ হবে না। 

সহবাস সম্পর্কে কিছু কুসংস্কার কথাবার্তা। রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কিনা

আগের কার সময়ে সেই যুগে অনেকেই অনেক কুসংস্কার কথা বলতো।  রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কি না তা নিয়ে।  বিভিন্ন ধরনের কুসংস্কার  ছিল  যা  অনেকে মেনে চলত। এমন কুসংস্কার কিছু কথা রয়েছে রমজান মাসে সহবাস করা নিয়ে অনেকেই হয়তো আমাদের মাঝে অনেকেই হয়ত এখনো এই নিয়মগুলো বা কুসংস্কার কথাবার্তা নিয়ে বা মেনে চলছে।  তাই আজকে তাদের জন্য আমাদের এই পোস্ট।

 সহবাসের পর গোসল না করে সেহরি খেলে রোজা হবে কিনা

অনেক হাদীসে রয়েছে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অনেক সময় নাপাক অবস্থায় সেহরি করতেন এবং ফজরের আযানের পর গোসল করে নামাজ আদায় করতেন।
রোজাদার তারা যদি জুনুবী গোসল ফরজ অবস্থায় ভোর হলে গোসল করে তাহলে তাতে কোন ক্ষতি নেই।  যদি রাতে স্ত্রী সহবাস করার  সকাল হয়ে যায়, ফজর উদিত হওয়ার পর গোসল করে তাহলে তাতে কোন সমস্যা নেই। 
  মহানবী সাল্লাম আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলে রেখেছেন যেমন
এতে কোন সমস্যা নেই, রাতের শেষ সময় যদি স্ত্রী সহবাস করে সেহরি খাওয়া যাবে ফজরের আযানের পর গোসল করে নিতে হবে এতে কোন সমস্যা নেই।

 সহবাসের ক্ষেত্রে কিছু  নিষিদ্ধতা / রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কিনা তা জেনে নিন

 মহান আল্লাহতালা বলেছেন স্বামী স্ত্রী একে অপরের সাথে সহবাস করা সওয়াবের কাজ।  তাই  স্বামী-স্ত্রী যখন সহবাস করেন তখন মহান আল্লাহ তায়ালা অনেক খুশি হন।  কিন্তু সহবাসের ক্ষেত্রে কিছু  নিষিদ্ধ রয়েছে।  এইসব আমাদের মেনে চলতে হবে।  তাই চলুন দেখে নেই নিয়মগুলো কি।

১ .  মহান আল্লাহতালা বলে রেখেছেন মেয়েদের যখন পিরিয়ড বা মাসিক হয় তখন সহবাস করা হারাম। 
 মহান আল্লাহ তালা বলেছেন তোমরা মাসিক ও পিরিয়ড চলাকালীন স্ত্রীর  সঙ্গম  বর্জন করো , যতদিন তারা পবিত্র না হয় ততদিন সহবাসের জন্য যাওয়া উচিত নয়। আমাদের মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সহবাস নিয়ে নিজেকে নিয়মগুলো রেখেছেন সেই এ নিয়মগুলো মেনে চলা।  মহান আল্লাহতালা  ক্ষমাপার্থী দের ও যারা পবিত্র থাকে তাদেরকে খুব পছন্দ করেন।  তাই আমরা আল্লাহকে খুশি রাখার জন্য সব সময় পবিত্র এবং আল্লাহ তাআলার ইবাদত করব ইনশাআল্লাহ।

২.  রমজান মাসে দিনের বেলায় রোজা রেখে সহবাস করা যাবে কি না তা জেনে নিন। রমজান মাসে রোজা রেখে যদি ভুল করে সহবাস করে থাকেন তাহলে আপনাকে কাফফারা দিতে হবে। 
 
৩. অসুস্থ থাকলে সহবাস করা ঠিক না।  এতে আপনার অনেক বড় ক্ষতি হতে পারে। এবং আপনি অনেক অসুস্থ হয়ে পড়বেন।

 ৪ হজ  অথবা ওমরা পালন করার পর সহবাস করা নিষেধ ।  এই নিয়ে মহান আল্লাহ তালা বলেছেন যে
 জিলহজ  শাওন জিলহজ মাসে  হজ  হয়। এই সময় যদি কেউ হজ করার পরিকল্পনা করে থাকে তাহলে সে যেন হজের সময় সহবাস না করে।  ঝগড়া-বিবাদ ও পাপ কাজ থেকে দূরে থাকুন।

৫ .মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কেউ যদি পায়ুপথ দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেন  তা হল হারাম একটি কাজ।
আল্লাহ রব্বুল আলামিন বলেছেন যে যে ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে বায়ু পথ দিয়ে সহবাস করেন তিনি তার দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না।

 কুসংস্কারগুলো সম্পর্কে জেনে নিন

  • চন্দ্র মাসের 1 তারিখ এবং 15 তারিখ সহবাস করা যাবে না
  •  রবিবার ও বুধবার রাতে সহবাস করা যাবে না
  •  বিদেশে যাওয়ার আগে রাতে সহবাস করা যাবে না
  •  যে গাছে ফল হয় সেই গাছের নিচে সহবাস করা যাবে না
  •  গভীর  রাতের আগে সহবাস করা যায় না
  •  জোহরের নামাজ হয়ে যাওয়ার পর সহবাস করা যাবে না 
  • খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে সহবাস করা যাবে কিনা
  • উল্টো ভাবে বা উলঙ্গ হয়ে সহবাস করা যাবে কিনা
  • পূর্ব-পশ্চিম হয় সহবাস করা যাবে কিনা
  •  স্বপ্নদোষ হওয়ার পর গোসল না করে সহবাস করা যায় কিনা
  • স্ত্রীর জরায়ুর দিকে তাকিয়ে সহবাস করলে চোখের জ্যোতি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই তাকিয়ে থেকে সহবাস করা যাবে  না।

 সহবাসের সময় স্বামী-স্ত্রীর যে দোয়াটি পড়তে হবে

মহান আল্লাহ তা'আলা তাদের জন্য সহবাস করার পূর্বে যে দোয়াটি পড়তে বলেছে এবং এই দোয়াটি পড়া খুবই জরুরী। এই দোয়াটি পড়ার পর স্বামী স্ত্রী সহবাসের সময় কোন ভাবেই শয়তান আক্রমণ করতে পারবে না। এবং আপনি এই দোয়াটি পড়ার পর শয়তানের হাত থেকে রেহাই পাবেন।

 দোয়াটি হলোঃ بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا

উচ্চারণঃবিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।’
  অর্থঃ হে আল্লাহ  আপনার নামে শুরু করেছি।  আপনি আমাদেরকে শয়তানের হাত থেকে মুক্তির রাখুন।  আমাদেরকে যে সন্তান দান করবেন সেই সন্তানকে শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করুন।

 শেষ কথাঃ

 আজকের আলোচনাতে রয়েছিল রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কিনা।  আমাদের আজকের এই পোস্টটিতে আমরা খুব অল্প সময়ে জেনে নিয়েছি যে রমজান মাসে রাতে সহবাস করা নিয়ে কিছু কুসংস্কার কথা।  আমরা যদি মহান আল্লাহতালার নিয়ম মত ইবাদত বন্দেগী ইত্যাদি সকল নিয়ম কারণ মেনে চলতে পারি তাহলে আমাদের জীবন হবে সুখের।  এবং মহান আল্লাহ তাআলার প্রিয় বান্দা হতে পারব আমরা যদি মহান আল্লাহতালার নিয়ম অনুসরণ করি।  তাই আমরা সবসময় চেষ্টা করব মহান আল্লাহ তাআলার সকল নিয়ম এবাদত-বন্দেগি ইত্যাদি দায়িত্ব পালন করার।  আশা করবো আজকের এই পোস্টটিতে আপনি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা থেকে বের হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।  আজকের এই আলোচনায় আমরা লিখেছি যে রমজান মাসে রাতে সহবাস করা যাবে কিনা।  এবং রমজান মাসে সহবাস করা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads