তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সূচি ২০২৩

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়
তাহাজ্জুদ নামাজের সময় img:freepik

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে আমাদের আজকের আলোচনা। তাহাজ্জুদ নামাজের উত্তম সময় কোনটি সেটা অনেকেই জানতে চান। তাই আজকের পর্বে আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। পাশাপাশি তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, তাহাজ্জুদ নামাজের ফজিলত, তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত, তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করব। 

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম। তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য শ্রেষ্ঠতম এবাদতগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে তাহাজ্জুদ নামাজ। তাহাজ্জুদ নামাজ সম্পর্কে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন- মহানবী (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘রমজানের পর সর্বশ্রেষ্ঠ রোজা হলো আল্লাহর মাস মহররমের রোজা। আর ফরজ নামাজের পর সর্বশ্রেষ্ঠ নামাজ হলো রাতের (তাহাজ্জুদের) নামাজ।’ (মুসলিম: ১১৬৩)

মুমিন বান্দাদের গুরুত্বপূর্ণ এবাদত গুলোর মধ্যে তাহাজ্জুদ নামাজ অন্যতম। তাহাজ্জুদ নামাজ হচ্ছে মুমিন বান্দাদের আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম। অনেক অলি-আওলিয়া, পীর বুজুর্গ তাহাজ্জুদ নামাজকে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে আদায় করে থাকেন। আমাদের প্রিয় নবী সাঃ কখনো তাহাজ্জুদ নামাজ মিস করতেন না। তাই তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব অনুধাবন করে আমাদের প্রত্যেকের উচিত তাহাজ্জুদ নামাজের সময় দেওয়া। 

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম ও নিয়ত

তাহাজ্জুদ নামাজের আলাদা কোন নিয়ম নেই। আমরা সাধারণত নফল নামাজ যেভাবে আদায় করি ঠিক একই নিয়মে তাহাজ্জুদ নামাজের আদায় করতে হবে। অন্যান্য নফল নামাজের মত সানা, সূরা ফাতিহা এরপর যেকোনো সূরা মিলিয়ে এই নামাজ আদায় করতে হয়। সাধারণত আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ তাহাজ্জুদ নামাজে দীর্ঘ কেরাত করতেন পাশাপাশি সেজদা এবং রুকুতে বেশি সময় ব্যয় করতেন। আমরা চাইলে সেভাবে করতে পারি। 

এছাড়া তাহাজ্জুদ নামাজের রুকু, সিজদা, কেরাত পড়া, দরুদ, তাশাহুদ, দোয়ায়ে মাসুরা অর্থাৎ অন্যান্য নফল নামাজে আমরা যে সকল দোয়া দরুদ করি সব ধোয়া দরুদ একই রকম ভাবে তাহাজ্জুদ নামাজও করতে হবে। তাহাজ্জুদ নামাজের সময় হলে ঘুম থেকে উঠে প্রথম দুই রাকাত নামাজ আদায় করে পরে দুই রাকাত দুই রাকাত করে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করবেন। প্রথমে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে সালাম ফেরাতে হবে, তারপর আবার নিয়ত করে দুই রাকাত নামাজ আদায় করে সালাম ফেরাতে হবে। অর্থাৎ দুই রাকাত,  দুই রাকাত করে নামাজ আদায় করতে হবে। 

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত সম্পর্কে আলাদা করে বলার কিছু নেই। আমরা সাধারণত মনে মনে যখন সংকল্প করবো যে নামাজ আদায় করতে চাই তখনই নিয়ত হয়ে যায়। নিয়ত হচ্ছে মনের ব্যাপার,  আলাদা করে মুখে উচ্চারিত করে বলার কিছু নেই। আল্লাহ পাক আমাদের মনের অবস্থা জানেন। তাই আমরা যখন নামাজের জন্য প্রস্তুতি নেই,  মূলত তখনই আমরা নামাজের নিয়ত করে ফেলি। তারপরও একান্ত যদি নামাজের নিয়ত করার প্রয়োজন বোধ হয়।  তাহলে বাংলাতেও করা যাবে। নামাজে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দুই রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করছি,  আল্লাহু আকবার বলে নামায আদায় করা শুরু করা যাবে। তথ্যসূত্র

তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজের উত্তম সময় হচ্ছে শেষ রাতের আগ মুহূর্ত। তাহাজ্জুদ নামাজের সময় এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিকের সময় পর্যন্ত। তবে সবচেয়ে উত্তম সময় হচ্ছে রাত্রির শেষ ভাগে তার জন্য নামাজ আদায় করা। তাহাজ্জুদ নামাজের সময় যদি শেষ রাত্রি নির্বাচন করা হয় তাহলে তাতে ফজিলত রয়েছে। যেহেতু তাহাজ্জুদ নামাজের সময় এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত তাই এই সময়ের যেকোনো সময় নামাজ আদায় করলেও হবে। 

যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতে চাই সে এশার নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে পড়বে। এরপর মাঝ রাতে ঘুম থেকে উঠলেই তাহাজ্জুদ নামাজের সময় নির্ধারিত হয়ে যাবে। ঘুম থেকে উঠে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবে, তারপর তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া শুরু করবে। 

তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল । তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল তা বোঝার আগে আমাদেরকে বুঝতে হবে সুন্নত কাকে বলে এবং নফল কাকে বলে। ফরজ ব্যতীত যতো এবাদত রয়েছে তার সবই নফলের আওতাভুক্ত। নবীজি সালাম যে সকল এবাদত করেছেন এবং আমাদেরকে পড়তে বলেছেন সেগুলো হচ্ছে সুন্নত। এখন এভাবে বিবেচনা করলে তাহাজ্জুদ নামাজকে নফল নামাজ বলা যায় আবার সুন্নত নামাজেও বলা যায়। যেহেতু নবীজি সাল্লাল্লাহু সাল্লাম গুরুত্ব সহকারে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেছেন এবং তার উম্মতদেরকেও তাহাজ্জুদ নামাজের ব্যাপারে জোর দিয়েছেন তাই তাহাজ্জুদ নামাজ কে সুন্নত নামাজ বলা যায়। 

যেহেতু নবীজি সাল্লাল্লাহু সাল্লাম এর তাজিম আমাদের ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়েছেন তা আমাদের উচিত তাহাজ্জুদ নামাজের সময় মত আদায় করা। তথ্যসূত্র

তাহাজ্জুদ নামাজের সূরা । তাহাজ্জুদ নামাজের সময়

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় ও আরো অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। এবার তাহাজ্জুদ নামাজের সূরা সম্পর্কে জানব। যারা ইন্টারনেটে সার্চ করছেন তাহাজ্জুদের নামাজের সূরা সম্পর্কে জানার জন্য। তাদেরকে বলছি, তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য আলাদা করে কোন সূরা পড়তে হয় না। আমরা প্রত্যেক নামাজের যে সকল সূরা পড়ে নামাজ পড়ি তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা যাবে। অর্থাৎ সুরা ফাতেহা পড়ার পর, যে কোন সূরা মিলিয়ে পড়া যাবে। আলাদাভাবে নির্দিষ্ট কোন সূরার কথা উল্লেখ নেই। 

মহিলাদের তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম

ইতিমধ্যে আমরা তাহাজ্জুদ নামাজের সময় এবং অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে জেনেছি। মহিলাদের তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম বলতে আলাদা কোন নিয়ম নেই। ঘরে নারীরা অন্যান্য নামাজ নিয়ে  নিয়মে আদায় করেন তাহাজ্জুদ নামাজের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম অনুসরণ করতে হবে। তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য মহিলাদের অথবা নারীদের আলাদাভাবে কোন নিয়োম এর কথা উল্লেখ নেই। 

তাহাজ্জুদ নামাজের সময় শেষকথা

আমাদের আজকের পোষ্টের মূল আলোচনার বিষয় ছিল তাহাজ্জুদ নামাজের সময়সূচি সম্পর্কে।বছরের প্রত্যেকটা দিন তাহাজ্জুদ নামাজের সময় এশার নামাজের পর থেকে সুবহে সাদিকের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত পড়া যায়। আশা করছি তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে আপনারা সুস্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।আশা করব আমরা প্রত্যেকেই তাহাজ্জুদ নামাজের সময় মেনে নামাজ আদায় করব। তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে যদি আপনার আরো কিছু জানার থাকে তাহলে আমাদেরকে কমেন্টে জানাতে পারেন। 
আমরা চেষ্টা করেছি অনলাইনে বিশ্বস্ত সূত্র থেকে তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সম্পর্কে আপনাদেরকে ধারণা দেওয়ার জন্য। তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সংক্রান্ত এই পোস্ট যদি আপনার কাছে কোন দিক থেকে অসংগতিপূর্ণ মনে হয় তাহলে আমাদেরকে জানাতে পারেন। 



শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads