বাংলাদেশের ষড়ঋতু। বাংলা রচনা ও প্রবন্ধ

বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা

বাংলাদেশের ষড়ঋতু রচনা 

সূচনাঃ সুজলা-সুফলা, শস্য- শ্যামলা বাংলাদেশের অপরুপ  সৌন্দর্য  ও ঐশ্বর্য চিরকালের গর্বের বিষয়। একদিকে এই সৌন্দর্যের প্রতি মুগ্ধতা এবং অন্যদিকে তার ঐশ্বর্যের প্রতি লালসা বহু প্রাচীনকাল থেকে এই দেশটি বহু বিদেশিকে আকর্ষণ করেছে।এর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের ষড়ঋতু চক্রটি চলতে থাকে।এক একটি ঋতুর ফলে বাংলা সৌন্দর্য চক্রাকারে  পর্বরতিত হয়।  বাংলাদেশর ষড়ঋতু যেন মনকে ছুঁয়ে যায়। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঋতু বৈচিত্রে মুগ্ধ হয়ে লিখেছিলেন – 

ওমা, ফাগুনে তাের আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায়রে-  ওমা, অঘ্রানে তাের ভরা ক্ষেতে কী দেখেছি মধুর হাসি।

ঋতুরঙ্গময়ী রূপসি বাংলা। বঙ্গ-প্রকৃতির ঋতুরঙ্গে তার কী ছন্দোময়, সংগীতময় অনুপম-রূপ বদল! ঋতু পরিবর্তনের বর্ণ বিচিত্র ধারাপথে নিয়ত উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে তার অন্তহীন রূপের খেলা, রঙের খেলা, সুরের খেলা। অনুপম বৈচিত্রময় ঋতুরঙ্গোর এমন উজ্জ্বল প্রকাশ বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোথাও দেখা যায় না। তাই রূপমুগ্ধ পুলকিত কবি তার আবেগ-স্নিগ্ধ উচ্চারণে বাংলাকে বলেছেন- ‘রূপসি বাংলা’। ছয় ঋতুর দেশ এই রূপসি বাংলাদেশ। ছয় ঋতুর ছয় রূপ। প্রতিটি ঋতু এখানে আসে তার স্বাতন্ত্রের অনুপম রূপসজ্জায়। রূপের ঐশ্বর্যে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে বাংলার পথ-প্রান্তর। এরপর বেজে ওঠে তার অশ্রুবিধুর বিদায়ের করুণ রাগিণী। সে তার রূপ বিস্তারে অন্তিম স্মৃতিচিহ্নটুকু নিঃশেষে মুছে নিয়ে চলে যায় কালের অনন্ত যাত্রাপথে। এক ঋতু যায়, আসে অন্য ঋতু।

ঋতু চক্রের আবর্তনঃ

বাংলাদেশের  ভৌগোলিক অবস্থানের জন্যই ঋতু পরিবর্তন ও জলবায়ুর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। উত্তরে হিমালয় পর্বত,ও দক্ষিণে বঙ্গপোসাগর, মৌসুমি বায়ু এদেশের ঋতু পরিবর্তনে ভুমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের মাঝখানে দিয়ে ভৌগোলিক দ্রাঘিমারেকা লক্ষ্য করা যায়। যা এই ঋতু পরিবর্তনের মুল কারণ। তাই বলা যায় মুলত বাংলাদেশের এই ভৌগোলিক কারণে এই ঋতু চক্র লক্ষ্য করা যায়। যা অন্যদেশের থেকে অনেক বেশি পার্থক্য আছে।আর এইসব কারণেই বাংলাদেশে ১২ মাসে ৬  টি ঋতু চক্রাকারে আবর্তিত হয়।

ঋতুভেদে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যঃ

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তার ঋতুবৈচিত্র্যের মধ্যে চমৎকারভাবে প্রত্যক্ষ করা যায়। বার মাসে ছয় ঋতুর এদেশে প্রতিটি ঋতু তার অনন্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে আগমন করে এবং নিজের অনাবিল সৌন্দর্য উপহার দিয়ে বিদায় নেয়। মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে এদেশে ঋতুর আবির্ভাব ঘটে এবং সেগুলাে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়। তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত ও বায়ুপ্রবাহের তারতম্যে ঋতুগুলাে একটি থেকে অপরটি পৃথক। তেমনি প্রতিটি ঋতুর ভিন্ন ভিন্ন রং ও সৌন্দর্য।যার কোনো তুলনা হয় না।

পল্লী প্রকৃতির দৃশ্যঃ

বাংলাদেশের পল্লী প্রকৃতির রূপ কতই মনোহরী, যেন সৌন্দর্যের হাট বসে গিয়েছে চারিদিকে সবুজ আর সবুজ । যে দিকেই তাকানো যায় বিচিত্রবেশী প্রকৃতির হাতছানি প্রত্যক্ষ করা যায়। কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও বাংলাদেশের এই পল্লী প্রকৃতিকে ভুলতে পারেননি। পল্লী প্রকৃতির সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে লিখেছিলেন – 

অবারিত মাঠ, গগন, ললাট চুমে তব পদধূলি
ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড় ছোট ছোট গ্রামগুলি।

বাংলাদেশের ষড়ঋতুঃ

বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। রূপসি বাংলার ছটি ঋতু যেন তার ছটি সন্তান। ছটি রঙের ছটি সুরের পাখি। যেন পালা করে তার মায়ের কোলে চলে আসে তার নিজস্ব সৌন্দর্য নিয়ে।আর একজন চলে যেতে না যেতে মাকে দেখতে আরেক সন্তান তার রুপ নিরে।দুই মাস মিলে এক একটি ঋতু

ক) বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস গ্রীষ্মকাল

খ) আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস বর্ষাকাল

গ) ভাদ্র-আশ্বিন এই দুই মাস শরৎকাল

ঘ) কার্তিক-অগ্রহায়ণ এই দুই মাস হেমন্তকাল

ঙ) পৌষ-মাঘ এই দুই মাস শীতকাল

চ) ফাল্গুন-চৈত্র এই দুই মাস বসন্তকাল।

স্বভাবেও এক একটি ঋতু এক এক রকম। তাই আমাদের দেশকে ষড়ঋতুর দেশ বলা হয়ে থাকে। 

ঋতুবৈচিত্ৰ্যঃ

রূপসী বাংলাদেশের যেরূপ বৈচিত্ৰ্য তা প্রায় সম্পূর্ণ ঋতুভিত্তিক। যদিও বাংলাদেশের প্রকৃতিতে স্থায়ী রূপের পরিচয় রয়েছে কিন্তু তার বৈচিত্র্য প্রায় সম্পর্ণ ঋতু নির্ভর। ঋতু পরিবর্তনের অর্থই প্রকৃতির নতুন নতুন রূপ ধারণ। ঋতু এখানে আসে নবরূপে।  তাই বাংলাদেশের রূপ সুষমার কথা বলতে গেলে এর ঋতুবৈচিত্র্যের কথাও এসে যায়।

ঋতু চক্রে বাংলাদেশ বনাম অন্য দেশঃ

বাংলাদেশই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যেখানে ৬ টি দেখা যাই।তাও বাংলাদেশেকে ষড়ঋতুর দেশ বলা হয়।বারো মাসে ছয়টি ঋতু তাদের আলাদা আলাদা রূপ নিয়ে হাজির হয়,যা এই পৃথিবীতে বিরল।পৃথিবীর প্রতিটি দেশে কোথাও দুইটি আবার কোথাও ৩ টি করে ঋতু লক্ষ্য করা যায়।আবার খুব কম সংখ্যাক দেশে আবার চারটি ঋতু দেখা যায়।

মৌনী-তাপস গ্রীষ্মকালঃ

ঋতুচক্রের প্রথম নাকয় হচ্ছে গ্রীষ্ম। 

সময়ের চাকা ঘুরেই ঘটে প্রকৃতির পট পরিবর্তন। ষড়ঋতুর মধ্যে প্রথমেই আসে গ্রীষ্মকাল। বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ (এপ্রিল মাসের মধ্যভাগ থেকে জুন মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত) এই দুই মাস গ্রীষ্মকাল।

এই ঋতুতে দিন বড় আর রাত ছােট হয়। গ্রী প পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষের প্রথম দিন হিসেবে উদযাপিত হয়। বৈশাখের বড় আনন্দ এবং বড় উৎসবই হচ্ছে বৈশাখি মেলা। মেলায় চলে নান রঙের খেলা। এ যেন আনন্দের মেলা। 

 নির্দয় নিদাঘ-সূর্য কঠিন হাতে ছুঁড়ে মারে তার নিদারুণ খরতপ্ত অগ্নিবাণ । প্রখর তাপদাহে জীবধাত্রী ধরিত্রীর বক্ষ বিদীর্ণ হয়ে যায়, চৌচির হয়ে যায় তার তৃষ্ণার্ত প্রান্তর। ফটিক পাখির মতো সমগ্র উদ্ভিদ ও জীবজগৎ আকণ্ঠ আকাশের করুণা ভিক্ষা করে।  তাই কবি বলেছেন-

"ঘাম ঝরে দর দর গ্রীষ্মের দুপুরে

মাঠ-ঘাট চৌচির, জল নেই পুকুরে"


গ্রীষ্মের প্রকৃতিঃ

গ্রীষ্মের মরু-রসনায় ধরিত্রীর প্রাণ-রস শােষিত হয়ে কম্পিত শিখা উঠতে থাকে মহাশূন্যে। এই দারুণ দহন-জ্বালা স্তব্ধ করে দেয় সকল পাখ-পাখালিকে, জীব-জানােয়ারকে। সর্বত্রই এক ধূসর মরুভূমির ধু-ধু বিস্তার। সমগ্র জীবজগতে নেমে আসে এক প্রাণহীন, রসহীন, পাণ্ডুর বিবর্ণতা। তারই মধ্যে একদিন কালবৈশাখীর আগমন ঘটে।এই দারুণ জ্বালা স্তব্ধ করে দেয় সকল প্রকার পাখপাখালিকে ও জীব -জানোয়ারকে।সবদিকেই যেন এক ধু ধু মরুভূমি। সব কিছুই তার উৎতাপে হয়ে উঠে রসহীন, প্রানহীন,নির্জীব। এই প্রচন্ড উত্তাপে হানা দেয় কালবৈশাখী ঝড়।নদীর নালা পুকুরের সব পানি শুখিয়ে খা খা করতে থাকে।প্রচুর উত্তাপ থেকে রক্ষা পেতে গ্রাম বাঙলার মানুষ ঘর থেকে বেড়িয়ে গাছের ছায়া তলে আশ্রয় নেয় একটু গা শীতল করার আশায়।

গ্রীষ্মের ফুল ও ফলঃ

গ্রীষ্ম ফুলের ঋতু নয়, ফুল ফোটাবার তেমন কোনাে তাড়া নেই তার। শুধু ফলের ডালা সাজিয়েই সে নিঃশব্দে বিদায় নেয়। এই ঋতুতে আম, জাম, জামরুল, কাঁঠাল, আনারস, পেয়ারা, লিচু, তরমুজ, আমড়া প্রভৃতি সুস্বাদু ফল জন্মে। গােলাপ, বকুল, বেলি, টগর, জবা প্রভৃতি সুগন্ধি ফুলও এ সময়ে ফোটে। আর ফুলের মধ্যে টগর, জবা লাল হয়ে ফুটে থাকে।

সজল বর্ষাকালঃ

বাংলাদেশে বর্ষা আসে বিধাতার করুণারধারা নিয়ে। বাংলা বর্ষের দ্বিতীয় ঋতু বর্ষা এবং এর স্থিতি আষাঢ় ও শ্রাবণ (জুন মাসের মাঝামাঝি থেকে আগস্ট মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত) এই দুই মাস। এই ঋতুতে আবহাওয়া সর্বদা উষ্ণ থাকে। কবি সুফিয়া কামাল বর্ষার আগমন নিয়ে লিখেছিলেন – 

আমি বর্ষা, আসিলাম গ্রীষ্মের প্রদাহ শেষ করি
মায়ার কাজল চোখে, মমতায় বর্মপুট ভরি।

গ্রীষ্ম পিপাসার্ত বাংলাদেশকে বর্ষার হাতে তৃষ্ণা নিবারণের ভার দিয়ে বিদায় নেয়। দূর-দিগন্তে ধূসর আকাশের বুকে স্তরে স্তরে জমে ওঠে নবীন মেঘের স্তুপ। যা দেখে আনন্দে মন নেচে উঠে। মাঠে ঘাটে জেন প্রানের ছোয়া লাগে,প্রতিটি বৃষ্টির ফোঁটায়।

বর্ষার প্রকৃতিঃ

"এদিগ দিগন্তে যত দূর চাহি,পাংগু মেঘের জাল
পায়ে জরাইয়া পথে দাড়ায়াছে আজিকার মহাকাল।"

কালো মেঘের অপূর্ব সমারােহে আকাশ-বাতাস ব্যাপ্ত করে আসে শ্যামল, সুন্দর, নয়নাভিরাম বর্ষা। মুহুর্মুহু বিদ্যুৎ ও গুরুগম্ভীর বজ্রনিনাদের ‘অতি-ভৈরব হরষে’র মধ্যে সূচিত হয় তার শুভাগমন। সেই সঙ্গে পৃথিবীর ধূসর বুকে ঘনিয়ে আসে স্নিগ্ধ-শীতল ছায়াঘন দিন। আকাশে নিবিড়-কালাে মেঘরাজির আনাগােনায়, নিচে বন-প্রকৃতির বুকে মেঘমেদুর ছায়া-বিস্তারে বর্ষা প্রকৃতি অপরুপ সাজে সজ্জিত হয়। সুদূর দিগন্ত থেকে দুরন্ত বায়ু ছুটে আসে শোঁ-শোঁ শব্দে। শুরু হয় শীতল ধারা-বর্ষণ। বহুদিন পরে বাংলার শুষ্ক প্রান্তরে, নদী-নালায় ও খাল-বিলে জাগে কল-মুখর প্রবল প্রাণােচ্ছ্বাস; বহুদিন পর বাংলার বুকে আবার শােনা যায় নানা সংগীতমুখর সুধাকণ্ঠ পাখির কল-কূজন। মাটির কঠিন শাসন ভেদ করে নবীন শস্য-শিশুর দল বেরিয়ে পড়ে নবজীবনের জয়যাত্রায়।

এ সময় গ্রামাঞ্চলে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হয়ে ওঠে নৌকা। বর্ষায় নদী-নালা, খাল-বিল ও পুকুর-ডােবা কানায় কানায় ভরে ওঠে। এ ঋতুতে প্রচুর ইলিশ মাছ পাওয়া যায়। তারপর আকাশে আকাশে বেজে ওঠে বর্ষা বিদায়ের বিষন্ন মাদল। বার্ষিক মােট বৃষ্টিপাতের ৮০ ভাগেরও অধিক বর্ষাকালেই সংঘটিত হয়।প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে অধিকাংশ প্লাবনভূমিই বর্ষাকালে প্লাবিত হয়। ডুবে যায় ফসলের মাঠ, শহরের বস্তি। ভেঙে পড়ে কাঁচা ঘরবাড়ি। ঘরে ঘরে শুরু হয় জ্বরজারি আর পেটের পীড়া। এভাবে সুখে-দুঃখে-আনন্দে একসময় আষাঢ় শ্রাবণের দিন ফুরােয়। শুকনাে মাটির বুকে রসের জোয়ার এনে বর্ষা বিদায় নেয়। ধুয়ে যায় যত সব আবর্জনা। বর্ষার অঢেল দানের মধ্যে কিছু কষ্টের স্মৃতিও রেখে যায় আমাদের মনের গভীরে।

বর্ষার ফুল ও ফলঃ

বর্ষা কালে ফল খুব কমই পাওয়া যায়।কিন্তু বর্ষার বৃষ্টির ফোটা পুষ্প গাছ জেগে তোলে নতুন রুপে।গাছে গাছে নতুন পাতা ও ফুলে ভোরে যায়।বর্ষার ফুল গুলো হল-কেয়া,কদম,কামিনী, জুই,শিউলি ইত্যাদি। বর্ষায় আনারস,পেয়ারা, শশা সহ নানা ধরনের ফল পাওয়া যায়।এই সময় গাছে গাছে সাদা, হলুদ মিশ্রিত কদম ফুল সকালে মন কেরে নেয়।তাই কবি গুরু বলেন-

"গুরু গুরু ডাকে দেয়া
ফুটিছে কদম কেয়া"।

শুভ্র শরৎকালঃ

ঋতুচক্রের আবর্তনে বর্ষার পরেই আসে শরৎ। বাংলা তৃতীয় ঋতু হল শরৎকাল। শরৎ এক অপূর্ব শোভা ধারণ করে আবির্ভূত হয়। ভাদ্র ও আশ্বিন (আগস্ট মাসের মধ্যভাগ থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যভাগ পর্যন্ত) মিলে শরৎকাল। শরৎ ঋতুকে বলা হয় ঋতুর রাণী। 

‘আজি তােমার মধুর মুরতি হেরিনু শারদ প্রভাতে’ –

বাংলার রুপের রঙ্গমঞ্চে এভাবেই শরতের আবির্ভাব। বর্ষার কালো মেঘে রেশ কাটিয়ে চলে আছে শরত।  মেঘমুক্ত সুনীল আমাশের রূপ-কান্তি, আলােচ্ছায়ার লুকোচুরি শিউলি ফুলের মন-উদাস-করা গন্ধ, নদীতীরে কাশফুলের অপূর্ব শুভ্র সমারােহ, প্রভাতে তৃণ-পল্লবে নব-শিশিরের আলিপন, তাতে প্রভাত-সূর্যের মৃদু আলোয় এবং শুভ জোছনা-পুলকিত রাত এই অনুপম রূপরাশি নিয়ে বাংলাদেশের পথে – প্রান্তরে শরতের  আনন্দময় আগমন ঘটে । তখন রুপালী জোছনার অপরুপ রথে চড়ে সৌন্দর্যের নানা উপহার ছড়াতে ছড়াতে যখন শরতের আগমন ঘটে, তখন চারদিকে রূপের দুয়ার খুলে যায়। বাংলাদেশের অনির্বচনীয় রূপ-মাধুরী যেন পূর্ণ হয়ে ওঠে কানায় কানায়। কবি অভিভূত হয়ে গেয়ে ওঠেন – 

শরৎ তোমার অরুণ আলোর অঞ্জলি
মুড়িয়ে গেছে ছাপিয়ে মোহন অঙ্গলি
শরৎ তোমার তোমার শিশির ধোয়া কুন্তলে
বনের পথে লুটিয়ে পড়া অঞ্চলে
আজ প্রভাতে হৃদয় ওঠে চঞ্চলি


শরতের প্রকৃতিঃ

"আজি ধানের ক্ষেত্রে রৌদ্র ছায়ার লুকাচুরি খেলা
নীল আকাশে কে ভাসালো সাদা মেঘের ভেলা।"
-রবিন্দ্রনাথ ঠাকুর 

শরতের প্রকৃতি থাকে স্বচ্ছ। প্রকৃতির এই নির্মল আকাশে সাদা মেঘ ঘুরে বেরায়।রাতের মেঘমুক্ত আকাশে থাকে অজস্র তারা।শিউলি ফুলের গন্ধতে মেতে উঠে চারিপাশ। আর নিদীর তীরে ফুটেথাকা সাদা কাশ ফুল মুক্ত বাতাসে প্রান খুলে হাসে।আকাশে সাদা মেঘ আর নদীর ধারে সাদা ফুল এই যেন এক মনোরম পরিবেশের সাক্ষাৎকার। আর বিলে বিলে ফোটে থাকা শাপলার দল যেন প্রান কেরে নেয়।এই দিকে গাছে পাকতে থাকে শরতের ফল তাল।পাকা তালের রসে ম ম করতে থাকে পুরো গ্রাম,ও নগর।এই সময় তালের পিঠার উৎসবের সাসাথে সাথে হিন্দুদের দুর্গাপুজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।

ধুসর হেমন্তঃ

হেমন্ত যেন শরতেই আরেক রুপ।বাংলার ঋতুনাট্যে সে যেন চতুর্থ শিল্পি।সে যেন উদাসীন, বিষন্ন চরিত্রে অধিকারী।রুপসি হেমন্ত ধুসর কুয়াশায় নয়ন ঢেকে ফসল ফলাবার সাধনায় থাকে মগ্ন। ক্ষেতে-খামারে রাশি রাশি ভারা ভারা সােনার ধান উঠতে থাকে। চারদিকে অন্তহীন কর্মব্যস্ততা। ঘরে ঘরে চলছে নবান্ন উৎসব। প্রাচুর্যময়ী হেমন্তের ফুলের বাহার নেই, সৌন্দর্যের জৌলুশ নেই, রূপ-সজ্জারও নেই প্রাচুর্য। আছে মমতাময়ী নারীর এক অনির্বচনীয় কল্যাণী রূপশ্রী। সে আমাদের ঘর সােনার ধানে ভরে দিয়ে শিশিরের মতাে নিঃশব্দ চরণে বিদায় গ্রহণ করে।

হেমন্ত যেন শীতের আগমনের বার্তা নিয়ে আসে।ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসবের ধুম পরে।

তাই কবি গুরু যথার্থই গেয়েছেন-

"ওমা অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে 
আমি কি দেখেছি মধুর হাসি"

উদাসীন শীতকালঃ

বাংলাদেশের ঋতুচক্রতে পঞ্চম এ রয়েছে শীতকাল।শীতকাল সাধারণত শুষ্কতা নিয়েই আসে। উষ্ণতর গ্রীষ্মের বিপরীতে বছরের শীতলতর ঋতু শীতকাল। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুসারে পৌষ ও মাঘ (মধ্য ডিসেম্বর থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারি) এই দুই মাস শীতকাল। শীতকাল প্রধানত শুষ্ক। কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে আসে শীত। শীতের রাত্রি হয় দীর্ঘ। শীতের মহিমায় কবি আপ্লুত হয়ে গেয়ে ওঠেন –

এল যে শীতের বেলা বরষ-পরে।
এবার ফসল কাটো, নাওগাে ঘরে।
করাে ত্বরা, কাজ আছে মাঠ-ভরা।


শীতের প্রকৃতিঃ

"শীত আসে কুয়াশার চাদর গায়ে দিয়ে।"

শোতকালে প্রকৃতি শুষ্ক ও ম্রান থাকে।এ ঋতু জীর্ণতার ঋতু।চারপাশে নিরবতা বিরাজ করে।উত্তর দিক থেকে আসতে থাকে হিমালয়ের ঠন্ডা বাতাস।এ সময় দিন ছোট হয় এবং রাত বড় হয়।ঠান্ডায় গাছের পাতারা তাদের রঙ হারিয়ে ক্রমশ হলুদ হয়ে আসে।তারপর একদিন ঝরে পরে যায়।তাই এই সময় বেশির গাছের পাতা ছাড়া এক নতুন রুপ দেখা যায়।প্রকৃতির মত জীবনেও দেখা যায় বিষণ্নতার একটি সুর।শীতকাল বাংলাদেশের সবচেয়ে আরামদায়ক একটি ঋতু। শীতের কুয়াশায় ঢাকা মিষ্টি সকাল যেন মনকে এক অন্য জগতে নিয়ে যায়। অনাবিল চিত্তে মনকে শিহরিত করে।গ্রাম বাংলায় শীতের সকালে কুয়াশায় আগুনের ভিড়ার চার পাসে মানুষই বসে গল্প করতে দেখা যায়।এই সময় অন্য দেশ থেকে আমাদের দেশে অনেক রকমের নাম না জানা অতিথি পাখি আগমন করে।এই সময় বিভিন্ন শাক-সবজি তে ভরে যায় ফসলের মাঠ।

শীতের ফল ও ফুলঃ

"শীতের হাওয়া লাগলো আজি

আমলকীর ওই ডালে ডালে"

এ সময় তরিতরকারির প্রাচুর্য দেখা যায়। কপি, মুলা, বেগুন, পালংশাক, মটরশুটি ইত্যাদিতে হাটবাজার পূর্ণ থাকে। কই, মাগুর, শিংসহ অন্য মাছ এ সময়ে প্রচুর পাওয়া যায়। এই ঋতুতে গাঁদা ও সূর্যমুখী ফুল ফোটে। কমলালেবু, বরই এ ঋতুরই ফল। শীতকালে খেজুর রস পাওয়া যায়। ঘরে ঘরে ভাপা, চিতই, পাটিসাপটা, পুলি ইত্যাদি পিঠা তৈরি করা হয়। এই ঋতুটি দেশ-বিদেশের নানা জাতীয় পাখপাখালির উৎসবের কাল।শীতের ফল হচ্ছে বরাই ও কমলা লেবু।আর খেজুরের গন্ধে চারদিক মো মো করে।

ঋতুরাজা বসন্তকালঃ

বাংলা  সর্বশেষ ঋতু বসন্ত। ফাল্গুন ও চৈত্র মাস (ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগ থেকে এপ্রিলের মধ্যভাগ পর্যন্ত) নিয়ে বসন্তকাল হলেও শুধু মার্চ মাসেই ঋতুটির সংক্ষিপ্ত অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। মাঘের সূর্য উত্তরায়ণে পাশ হয়ে চলে আসে ঋতুশ্রেষ্ঠ বসন্ত, আসে পুরতির পরম লগ্ন। বসন্ত আসে পুষ্পরাত্রির পরম লগ্নে। এমন মুগ্ধতা দেখে রবিন্দ্রনাথ বলে উঠেছেন-

"আহা-আজি এ বসন্তে 
কত ফুল ফোটে,কত বাশি বাজে,কত পাখি গায়
আহা আজি এ বসন্তে"

বসন্তের প্রকৃতিঃ

বসন্তের এই বনবিধির রিক্ত শাখায় জাগে কচি কচি কিশলায়ের অফুরন্ত উল্লাস।শীতের প্রচুর ঠান্ডা পেরোতেই গাছে গাছে গজাতে থাকে কচি কচি পাতা।ফুলে ফুলে ভরে যায় চারি পাশ।দূর দুরান্ত থেকে ভেষে আসে ককিলের কুহুতান। এই সমক অনেক ধরনের ফুল পাওয়া যায়।অশোক, শিমুল, পলাশ,কৃষ্ণচুরা,রাধাচূড়া, মাধবিলতা ও বিভিন্ন ধরনের গোলাপের সুবাশে সুভাসগিত হয়ে যায় সারা গগনতল।কবি গুরু বলেছেন-

"মহুয়ার মালা গলে কে তুমি এলে, 
নয়ন ভুলানো  রুপে কে তুমি এলে,"

মানব মনে ষড়ঋতুর প্রভাবঃ

মানব জীবনে ষড়ঋতুর প্রভাব অপরিসীম। গ্রীষ্মের অতিরিক্ত গরমে মানুষের মন থাকে ক্লান্ত, অবসন্ন,ও বিরক্তি ভাব।অতিরিক্ত গরমে মানুষ হয়ে পরে অসুস্থ ও অস্থির। । তাই এই গরম থেকে বাচার জন্য বৃষ্টির জন্য প্রর্থনা করতে থাকে। বর্ষার আগমন মনব মন কে করে তোলে শান্ত ও স্নিগ্ধ। মানুষের মনে বৃষ্টির দোলা লাগে।বর্ষার রিমঝিম বৃষ্টির ছন্দে মেতে উঠে চারিপাশ। বাদলের দিনে কবি মন নতুন নতুন গান ও কবিতা রচনা করে থাকে। শরতের কাশ পুর ও আকাশে সাদা সাদা মেঘে মানব মন মুগ্ধ হয়।প্রবল বৃষ্টির হাত থেকে মুক্তি পেয়ে যেন হাফ ছেরে বাচে।হেমন্তের সকলে ফসলের আনন্দে ভাসে শীতকালের রুক্ষতা মানুষকে গ্রাস করলেও শীতের পুলি পিঠা মানুষের মন কে পুলকিত করে।আর বসন্ত যেন নতুন ফুল ও মনোরম বাতাস বয়ে নিয়ে আসে মানব জীবনে।

ষড়ঋতু ও সংস্কৃতিঃ

ষড়ঋতু ও সংস্কৃতি যেন একই সূত্রে গাঁথা। হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে গড়া আমাদের এই বাংলাদেশ  দেশ। এ দেশের সম্মৃদ্ধ সংস্কৃতি এর রূপমাধুর্যে যেন একটি স্বতন্ত্র মাত্রা যোগ করেছে। বাংলা বর্ষবরণ ও বসন্তবরণের মতো অনুষ্ঠানগুলো আমাদের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হয়েছে। বয়ে এনেছে এক ঐতিহ্য। 

এগুলো রং, রূপ ও বৈচিত্রে সমকালীন প্রকৃতির অনুরূপ। ফলে সুপ্ত মনের পাতায় পাতায়, মনের অজান্তেই আমরা এঁকে যাই প্রকৃতির ছবি, লিখি কবিতা, গেয়ে উঠি  গান। মন হারিয়ে যায় অজানা ঠিকানায়।বৈশাখ মাসে বাংলা নববর্ষ যেন সকলের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অন্য তম দিক।হেমন্তের নবান্ন উৎসব, এবং শীতকালে পিঠাপুলির উৎসব না হলে বাঙালির চলেই না।আর বসন্তকে বরণ করে করতে সকলে বলে উঠে-

"ফুল ফোটুক আর নাই ফোটুক আজ বসন্ত। "

সাহিত্যে ষড়ঋতুর প্রভাবঃ

"বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি তাই পৃথিবীর রূপ আমি দেখিতে চাই না।"

বাংলা সাহিত্যে ষড়ঋতুর প্রভাব অনেক। কখনো কবি মনে সে স্থান করে নিয়েছে কখনোবা শিল্পীর কোমল তুলিতে ফুটে উঠেছে। ষড়ঋতুর প্রেমে আচ্ছন্ন হয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সহ অসংখ্য কবি  লিখে গেছেন শত শত কবিতা।  রচিত হয়েছে গান। আর বিভিন্ন ঋতুতে সেই কবিতা, গানগুলো স্থান পায়  সংস্কৃতি অঙ্গনে। সাহিত্যে এক এক ঋতু এক এক রূপে ফুটে উঠেছে। গ্রীষ্মকে বলা হয়েছে মৌন-তাপস, বর্ষাকে বলা হয়েছে সজল বর্ষা, শরৎ কে ডাকা হয়েছে শুভ্র নামে, হেমন্তকে ডাকা হয়েছে ধূসর, শীতকে ডাকা হয়েছে রিক্ত শীত আর বসন্তকে ডাকা হয়েছে ঋতুরাজ নামে। প্রতিটি ঋতুর ভিন্ন নামের অর্থই হল সবকটি ঋতুর ভিন্ন ভিন্ন রূপ। মোটকথা ষড়ঋতু বাংলা সাহিত্যকে করেছে পরিপূর্ণ।

গ্রাম ও শহর জীবনে ষড়ঋতুর প্রভাবঃ

"রূপসী বাংলার বাংলাদেশ, রূপের যে তার নেইকো শেষ। "

বাংলার রূপ দেখার জন্য সবচেয়ে উত্তম স্থান হল গ্রাম। শহরে আধুনিকায়ন আর উঁচু উঁচু দালান কোঠার ভিড়ে যেখানে সূর্যের দেখামেলা ভার, সেখানে রূপসী বাংলার রূপ খুব কমই অবলোকন করা যায়।  কিন্তু গ্রামে এর চিত্র ভিন্ন। বাংলার রূপ যেন গ্রামের প্রতিটি পথে মিশে আসে রয়েছে গ্রামের আনাচে-কানাচেতে । গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে গ্রামের মাটি ফেটে হয় চৌচির, বর্ষা মুখ্র দিনে যেন থৈ থৈ করে চারিপাশ।নদী মাছ ধরতে যায় অনেকে। ঋতুর রানী শরৎকে ভালো করে দেখা যায় গ্রামে ফুঁটে ওঠা শিউলি, গোলাপ, বকুল, মল্লিকা ফুলে, নদীর তীরে কাশফুল দেখে। হেমন্তে নবান্ন উৎসব শহরে দেখা না গেলেও শীতের কিছুটা আমেজে দেখা যায়। শীতের সত্যিকারের রূপ গ্রামেই ভালো করে অবলোকন করা যায়। শহরের মোটা দালানের ভিতর দিয়ে শীতের হিমেল ছোঁয়া আমাদের মনে পৌঁছাতে পারে না। কিন্তু গ্রামে শীতের চাদর মুরি দিয়ে আগুন পোহানোর দৃশ্য  মনকে আন্দোলিত করে। বসন্তের চিত্র শহরে ভিন্ন। গ্রামের থেকে শহরে বসন্তবরণের উৎসব বেশি চোখে পরে। যায় হোক, রূপসী বাংলা বুঝে না কি শহর কি গ্রাম। সে আসে তার রূপ নিয়ে। রূপের পসরা সাজিয়ে রাখে সবার জন্যে। 

উপসংহারঃ

❝এমন দেশটি কোথাও খুজে পাবে নাকো তুমি,
সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি। ❞

শুধু জননী জন্মভূমি রূপেই নয়, রূপসি বাংলার এই ষড়ঋতু নানা বর্ণ-গন্ধ গানের সমারােহে নিত্য-নতুন আবর্তিত হয়ে চলে। কিন্তু শহরবাসী ও শহরমুখী বাঙালি আজ আর অন্তরে অনুভব করে না তার সাদর নিমন্ত্রণ। ঋতু-পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে প্রকৃতি যখন বিবাহের কন্যার মতাে অপরূপ সাজে সেজে উঠবে বাঙালি তখন শুনবে কলকারখানার যন্ত্র-ঘর্ঘর-ধ্বনি কিংবা কম্পিউটারে অঙ্ক মেলাতে ব্যস্ত থাকবে সওদাগরি অফিসে। এভাবেই পরিসমাপ্তি ঘটে ষড়ঋতুর রূপ বৈচিত্র্যের সমারােহ। বাংলাদেশের অর্থনীতি, পরিবহন ও যােগাযােগ ব্যবস্থা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি তথা সামগ্রিক জীবনধারা ষড়ঋতুর দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত। বাংলার ষড়ঋতু পৃথিবীর যেকোন সৌন্দর্য পিপাসু মনকে আকৃষ্ট করে। এ দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কবি গেয়েছেন – 

কোন গগনে ওঠেরে চাঁদ  এমন হাসি হেসে
আঁখি মেলে তোমার আলো 
প্রথম আমার চোখ জুড়ালো
এ আলোকেই নয়ন রেখে মুদবো নয়ন শেষে।

সত্যিই ষড়ঋতুর বৈচিত্র্যময় সুন্দর্য্যে ভরা আমাদের এই বাংলাদেশ। কিন্তু কালের বিবর্তনে বাংলার সেই আগের রুপ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে হারিয়ে যাচ্ছে কিছু ঋতু।

হাবিবা আফরিন

আমার নাম হবিনা আফরিন । ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি আমার শখ। sorolmanus.com আমার সেই শখ পুরণে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আশা করছি আমার লেখার মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হবেন। সবাই আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads