সিজারের পর মায়েদের যত্ন কিভাবে নিবেন তার ১৫ টি কার্যকর উপায়

সিজারের পর মায়েদের যত্ন
সিজারের পর মায়েদের যত্ন

আসসালামু আলাইকুম আজকের পোস্টে আলোচনা থাকবে সিজারের পর মায়েদের যত্ন কিভাবে নিবেন তার ১৫টি করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত। আমরা জানি যে সিজার বড় ধরনের একটি অপারেশন তাই অবশ্যই সিজার মহিলাদের যত্ন খুবই দরকার। এজন্য আজকের এই আলোচনা সিজারের পর মায়েদের যত্ন কিভাবে নিবেন ১৫ টি কারণ জেনে নিন। সিজারের পর একটি মায়ের আলাদা যত্নের প্রয়োজন রয়েছে তাই অবশ্যই সিজারের পর মায়ের  যত্ন শুধু দরকার। সিজারের পর মায়ের যত্ন যদি সঠিকভাবে না নেওয়া হয় সে ক্ষেত্রে মারাত্মক সমস্যা দেখা দেয় তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে সিজারের পরে যে যত্ন নিতে হবে সেই বিষয়গুলো জানা দরকার। সিজারের পর মায়ের যত্ন কিভাবে নিতে হয় সে বিষয়ে যদি জানা থাকে সে ক্ষেত্রে যত্ন নিতে পারবেন খুব সহজেই তাড়াতাড়ি একজন সিজারিয়ান মাকে সুস্থ করা যাবে।

চলুন জেনে নেই সিজারের পর মায়ের যত্ন কিভাবে নিবেন তার ১৫ টি করনীয় কি।

বাচ্চা জন্মের আগেও পরে সিজারিয়ান মায়ের যত্ন কেমন হওয়া দরকারঃ

খুবই প্রয়োজন একজন সিজারিয়ান মায়ের যত্ন কেমন দরকার এবং সন্তান জন্মের আগেও পরে একটি মায়ের কিভাবে যত্ন নিতে হয়। এই বিষয়গুলো জানা খুবই খুবই প্রয়োজন।

বাচ্চা জন্মের আগে মাকে যত্ন নিতে হয় এবং বাচ্চার জন্মের পরও মাকে প্রচুর পরিমাণ যত্ন নিতে হয়। একজন সিজারের মহিলাকে যদি সঠিকভাবে যত্ন নেওয়া যায় মা ও শিশু দুজনই থাকবে এবং মারাত্মক ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাবে তাই অবশ্যই সিজারের মহিলাদের যত্ন নেওয়া খুবই দরকার। সর্বপ্রথম জেনে নিন বাঁচার জন্মের আগে মায়ের কিভাবে যত্ন নিতে হবে।
  1. ঢিলে ঢালা পোশাক পড়তে হবে
  2. সঠিক সময়ে টিকা দিতে হবে
  3. ঘুম ও বিশ্রাম নিতে হবে বেশি বেশি করে
  4. ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে
  5. ভারী কাজ থেকে সাবধানে চলতে হবে
  6. পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থাকতে হবে
  7. সঠিক পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে 
  8. প্রসবের তারিখ গণনা করা
সঠিক ও পুষ্টিকর খাবারঃ একটি মায়ের গর্ভবতী এর সময় পুষ্টিকর খাবার সঠিকভাবে খেতে হবে। কারণ গর্ভকালীন অবস্থায় একজন মা যদি পুষ্টিকর ভালো-মন্দ খাবার খেতে পারে সে খাবারগুলো বাচ্চাকে পুষ্টি দিতে সাহায্য করবে তাই অবশ্যই সন্তান জন্মের আগে বেশি বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো দরকার।

সঠিক সময়ে টিকা দেওয়াঃ গর্ভবতী মহিলাদের আরেকটি বিশেষ এবং খুবই জরুরী কাজ হচ্ছে সঠিক সময় দিতে হবে। যেমন গর্ভধারণের পাঁচ থেকে আট মাসের মধ্যে দুটি টিটি টিকা দেওয়া খুবই প্রয়োজন। টিটি টিকা দেওয়ার জন্য আপনার গর্ভের সন্তান ভালো থাকবে।

ভারী কাজ না করাঃ অবশ্যই আমাদেরকে মনে রাখতে হবে বাসায় যদি কোন গর্ভবতী মা থাকে সেক্ষেত্রে তাদেরকে দিয়ে কখনো ভারী কাজ করাতে যাবে না গর্ভকালীন অবস্থায় ভারী কাজ করতে গিয়ে মারাত্মক বিপদ ঘটতে পারে। আর আপনি যদি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তবে আপনি আপনার নিজের সুযোগ সুবিধা বুঝে কাজ করতে যাবেন ভারী কাজ কখনো করবেন না সেদিকে খেয়াল রেখে কাজ করলে গর্ভকালীন অবস্থায় কোন সমস্যা দেখা দিবেন না।

ঘুম ও বিশ্রাম নেওয়াঃ সাধারণ শরীর স্বাস্থ্য তো রাখার জন্য ৮ ঘন্টা ঘুমানোর নিয়ম। গর্ভবতী মায়েদের অতিরিক্ত চিন্তা বা টেনশন দুশ্চিন্তা রাত জাগা ইত্যাদি এসব থেকে বিরত থাকুন সময়মতো বিশ্রাম নিন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। গর্ভকালীন অবস্থায় রাতে 8 ঘন্টা এবং দিনে দুই ঘন্টা সবমিলিয়ে 10 ঘণ্টা আপনাকে রেস্টে থাকতে হবে। রাতে আধ ঘন্টা ঘুমাতে হবে এবং দিনে দুই ঘন্টা ঘুম বা বিশ্রাম নিতে হবে আপনার গর্ভে সন্তান সুস্থ রাখার জন্য আপনাকে এই কাজগুলো অবশ্যই করতে হবে। নিয়ম যদি আপনি সঠিকভাবে পালন করতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি এবং আপনার অনাগত সন্তান দুজনই ভালো থাকবে।

ভ্রমণ করাঃ গর্ভকালীন সময়ে সবসময় চেষ্টা করতে হবে বাসায় থাকার জন্য যদি কোন জরুরী প্রয়োজন হয় সেক্ষেত্রে আপনি বাসার বাইরে যেতে পারেন কিন্তু ঘন ঘন ভ্রমণ করা একদম উচিত নয়। এই সময় ভ্রমণ করা একেবারে নিষেধ। প্রথম তিন থেকে চার মাস এবং শেষের দুই মাস এই সময় কখনো জার্নি বা ভ্রমণ করবেন না যার ফলে মা ও শিশু মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।

পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা থাকাঃ গর্ভকালীন সময় এই সময় অনেক যত্ন নিতে হয় নিজেকে পরিষ্কার করেছিল তা রাখতে হবে অবশ্যই। কর্মকারের সময় সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে নিয়মিত গোসল করতে হবে ভালোভাবে মাথা পরিষ্কার রাখতে হবে পরিষ্কার রাখতে হবে। গর্ভকালীন সময় আপনি আপনার নিজের ভালো যত্ন নিবেন।

ঢিলে ঢালা পোশাক পরাঃ গর্ভকালীন সময় অবশ্যই মায়ের ঢিলেঢালা পোশাক করা দরকার। যদি কোন টাইপ বা অন্য কোন জর্জে কাপড় পরিধান করেন সে ক্ষেত্রে পেটে অনেক চাপ লাগতে পারে যার ফলে বাচ্চার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে পরিহার করতে হবে। সবসময় চেষ্টা করবেন  ঢিলে ঢালা পোশাক পড়ার জন্য।

কিভাবে সিজারের পর মায়ের জন্ম নিতে হবেঃ

কিভাবে সিজারের পর মায়ের যত্ন নিতে হবে সেই বিষয়ে আলোচনা করব। সিজারের পর মায়ের যত্ন অবশ্যই নিতে হবে এবং যত্ন সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কারণ সিজার খুবই মারাত্মক অপারেশন তাই এই রোগীদেরকে অবশ্যই যত্ন নেওয়া দরকার। অনেকেই হয়তো জানে না যে সিজারের পর মায়ের যত্ন কিভাবে নিতে হয়। তাই আজকে তাদের জন্য আমাদের এই আলোচনা জেনে নেই 
নিতে হয়।

কিভাবে সিজারের পর মায়ের যত্ন নিতে হবে সেই গুলো জেনে নিনঃ

সিজার মানে হচ্ছে বড় ধরনের একটি অপারেশন। সিজার বলতে বলা হয় যে পেটের একটি অংশ কাটা হয়। পেটের একটি অংশ কাটা হয় যার ফলে অবশ্যই এই রোগীদেরকে যত্ন নেওয়া খুবই দরকার। কারণ ভবিষ্যতে যেন কোন সমস্যা না হয় এমন ভাবে যত্ন নিতে হবে যাতে কাটা জায়গায় কোনভাবে ঘা না হয়।

সিজারিয়ান মহিলাদেরকে অবশ্যই বেশি বেশি করে ভিটামিনযুক্ত পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো দরকার। গর্ভকালীন অবস্থায় বা যখন বাচ্চা গর্ভে থাকে তখন মায়ের অনেক পুষ্টির ঘাটতি হয়ে যায় আর সন্তান জন্মের পর সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়া দেখতে গিয়ে অনেক পুষ্টি ক্ষয় হয় যার কারণে এই সময় বেশি বেশি করে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর দরকার।

সিজার বলে কথা তাই বাচ্চাকে দুধ পান করানোর জন্য সঠিকভাবে বসতে হবে ও যখন কোন মহিলার সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্মগ্রহণ করা হয় সেক্ষেত্রে আমাদেরকে বুঝতে হবে তার পেটে কাঁটা রয়েছে সেজন্য বারবার উঁচু-নিচু করে সন্তান রাখা বা তোলা নামা ইত্যাদি করা একদিন উচিত নয়।
সিজার করার পর অনেক মহিলাদের কোমর ও ড় ঘাড় প্রচুর পরিমাণে ব্যথা হয়ে থাকে। এজন্য ঘাড় ও কোমরের ব্যথা ব্যথা কমানোর জন্য একজন সিজারিয়ান মাকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রামের প্রয়োজন।

সিজারের মহিলাদেরকে অবশ্যই বলা হয়ে থাকে এটা তারা যেন ভারী কাজ একদমই নিষেধ করে রাখে আর এই কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে অতিরিক্ত ভারী কাজ করতে গিয়ে পেটের কাটা অংশে টান লেগে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই ভারী  কাজ থেকে বিরত থাকুন।

 সিজারের মহিলাদেরকে অবশ্যই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে কারণ পেটের একটি অংশ কাটা যার ক্ষেত্রে অনেকের মনে ভয় লেগে থাকে সিজার করার পর টয়লেটে কাজ কাজ সারতে অনেক কষ্ট হয়ে যায় তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন এই সমস্যা থেকে দূরে থাকুন এবং নিজেকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন।

সিজারের কতদিন পর সেলাই শুকিয়ে যায়ঃ

সিজারের কাটা জায়গায় কত দিনে শুকিয়ে যাবে এর কোন নির্ধারিত সময় নেই তবে সিজারের কিছুদিন পর আস্তে আস্তে কাটা জায়গা শুকিয়ে যাবে। যদি কারো শরীর রসালো হয় সেক্ষেত্রে একটু সময় লাগে শুকাতে আর যদি কারো শরীর শুকনা হয় সে ক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। দুই আড়াই মাসের মুখ দিয়ে সবকিছু ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু সারা জীবনের একটি দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে কখনো সিজারের ভারী কাজ করতে যাবেন না।। ভারী কাজ করার কারণে আপনার সেলাইয়ে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই অবশ্যই এই সমস্যা থেকে একটু সতর্কতা অবলম্বন করুন।

অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় খুব তাড়াতাড়ি ঘা শুকিয়ে যায় আবার অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায় একটু দেরি হয় সবার ক্ষেত্রে কিন্তু এক নয়। তবে। কাটা জায়গায় যদি সঠিকভাবে যত্ন বা অন্যান্য যাবতীয় যে কাজগুলো করতে হয় সেগুলো যদি করতে পারেন তাহলে অল্প কিছুদিনের মধ্যে আপনার কাটা জায়গায় শুকিয়ে যাবে। 

সিজারের কতদিন পর সন্তান নেওয়ার যাবেঃ

যেহেতু সিজার তাই দ্বিতীয় সন্তান নিতে গিয়ে আপনাকে একটু চিন্তা ভাবনা করে তারপর সন্তান নিতে হবে প্রথম সিজারের পর দ্বিতীয় সিজার কত দিনে করা যাবে সেই সম্পর্কে ভালোভাবে জেনে তারপর সিজারের কতদিন পর সন্তান নেওয়া যাবে সেটা জানতে পারবেন তবে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তারপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।। অনেকদিন সময় লাগে সিজারের মহিলাদের সুস্থ হোক তারপরও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেনা আর পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার আগে আবার যদি বাচ্চা নেয় তাহলে এতে করে মায়ের মৃত্যু ঝুঁকি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাই একজন সিজারিয়ান মহিলারা ভেবেচিন্তে তারপর আবার সন্তান নেওয়ার চেষ্টা করুন। তবে মন্তপক্ষে দুই বছর অপেক্ষা করে তারপর সন্তান নিতে পারবেন।

কিভাবে সিজারের পর মায়ের যত্ন নিবেনঃ

উপরে উল্লেখিত বিষয়ের ইতিমধ্যে আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে সিজারের পর মায়ের যত্ন নিতে হবে ইত্যাদি। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে বাচ্চা জন্মের আগে ও পরে সিজারিয়ান মায়েদের যত্ন কেমন হওয়া দরকার সিজারের পর মায়েদের কিভাবে যত্ন নিতে হবে সিজারের কতদিন পর সেলাই কে যায় সিজারের কতদিন পর বাচ্চা নেওয়া যাবে ইত্যাদি সকল বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads