শিশু অধিকার সম্পর্কে আপনি কতটা জানেন?

শিশু অধিকার
শিশু অধিকার

শিশু অধিকার 

শিশু শব্দ টার সাথেই অনেক ভালোবাসা জড়িয়ে আছে।শিশুদের ভালোবাসা বা পবিত্রার প্রতীক বলেও ভুল হবে না।শিশুরা আমাদের পৃথিবীর জটিল নিয়মনীতি জানে না তারা থাকে স্বচ্ছ সহজ সরল। শিশুদের তত্ত্বাবধানে যে প্রাপ্তবয়স্করা থাকেন তারা শিশু টিকে এই পৃথিবীর যে দিকের সাথে পরিচয় করে দিবে এবং সমাজে যেভাবে বাঁচতে শেখাবেন, ভালো মন্দের পার্থক্য বুঝতে যে দৃষ্টি কোণ টা শিশুটির মাঝে তৈরী করাবেন ভবিষ্যতে শিশু ও ঠিক সেই রকম হবে।তাই এক জন শিশুর বিচক্ষণ অভিভাবক খুব বেশি প্রয়োজন।।

শিশু কারাঃ

জাতিসংঘ ১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার কনভেনশন (সিআরসি) ঘোষণা করে। বাংলাদেশ জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশগুলোর একটি। শিশু অধিকার কনভেনশনের প্রথম অনুচ্ছেদেই বলা হয়েছে, 'আঠারো বছরের কম বয়সী সকল মানুষই শিশু।

শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্কদের মধ্যে অধিকার পার্থক্যঃ

  • ১.শিশুদের ভোট দেওয়ার অধিকার নেই 
  • ২.নাবালক আবস্থায় বিয়ে করতে পারবে না
  • ৩.নিজের সম্পতি হস্তান্তর বা চুক্তি করতে পারবেনা

শিশু অধিকারঃ 

যদিও ১৯৯০ সালে জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। তবে স্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে কাগজে-কলমে অনেক ধরনের উদ্যোগ নিতে চেষ্টা করলেও সামাজিক চর্চায় শিশুর অধিকার নিশ্চিত হয় নি।

ইউনিসেফে বলছে— যেহেতু শিশুদের ভোটাধিকার না থাকায় তারা এমন মানুষদের ওপর নির্ভর করে, যারা তাদের অধিকারকে সম্মান করা, সংরক্ষণ করা ও পূরণ করতে অঙ্গীকারাবদ্ধ। এই মানুষগুলো তাদের মতো করে ভাবতে পারছে কিনা— সেটা নিশ্চিত করা গেলে শিশু অধিকার নিশ্চিত হবে

আমাদের দেশে শিশু অধিকার  পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পরছে না যার ফলে দেশের বেশির ভাগ শিশু তাদের মৌলিক অধিকার গুলো না পাচ্ছে না।এর ফলে শিশু দারিদ্র্য, শিশু শ্রম বৃদ্ধি পাচ্ছে। 

বর্তমানের বেশিভাগ পরিবারে গুলোতে বাবা মা দুজনেই চাকুরিজীবী হওয়ায় তা শিশু হাতে মোবাইল ফোন তুলে দিচ্ছে। যখন একজন শিশু মোবাইল ফোন আসক্ত হয়ে যাচ্ছে তখন আবার তাদের অভিভাবক  তাদের হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নিচ্ছে। অনুরূপ ভাবে শিশুরা বাহিরে খেলতে যেতে চাইলে তাদের কে র্কাটুন দেখতে দেওয়া হয় আবার যখন তা নিজেরাই এগুলোতে আসক্ত হচ্ছে তখন তাদের আর সেই কাঙ্ক্ষিত জিনিস টা দেওয়া হচ্ছে না। এগুলো একটি শিশু জন্য মানসিক নির্যাতন।শিশুর মানসিক বিকাশে বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে। শিশুদের লালন পালনে জন্য যাদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে তা বেশির ভাগই অসচেতন। যেহেতু শিশুরা নিজের অধিকার নিয়ে কথা বলতে পারে না তাই তাদের এমন কাউকে দায়িত্ব দেওয়া দরকার যারা শিশু ভালো মন্দ বোঝেন এবং শিশু ভালো লাগা মন্দ লাগা চাওয়া পাওয়া গুলো শিশু মত করেও বুঝতে পারে।

আমাদের দেশে মেয়ে শিশুরাদেকে বেশি নির্যাতনের শিকার হতে হয়।বাল্যবিবাহ একটি সামাজি ব্যাধি।দক্ষিণ এশিয়ার দেশ গুলোতে এর হার অনেক বেশি।বাল্য বিবাহের ক্ষেত্রে বিশ্ব জনসংখ্যা পরিস্থিতি–২০২৩ প্রতিবেদনে ২০০৬ থেকে ২০২২ সালের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১৮ বছর বয়সের আগেই ৫১ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হচ্ছে।

শিশুদের জন্য প্রযোজ্য কিছু সাধারণ অধিকার

১.বেঁচে থাকার অধিকার
২.খাদ্য, বস্ত্র বাসস্থান,শিক্ষা, চিকিৎসা মৌলিক অধিকার গুলো সুনিশ্চিত করা
৩.ব্যক্তির নিরাপত্তার অধিকার
৪.নির্যাতন থেকে মুক্তির অধিকার
৫.নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি থেকে মুক্তির অধিকার
৬.অপরাধের অভিযোগে প্রাপ্তবয়স্কদের থেকে পৃথক হওয়ার অধিকার
৭. দ্রুত বিচারের অধিকার 
৮.তাদের বয়সের সাথে উপযুক্ত  আচরণ করার অধিকার 

জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদের চারটি মুলনীতি রয়েছে। সেগুলো হলোঃ 

১। বৈষম্যহীনতা 
২।শিশুর সর্বোত্তম স্বার্থ 
৩। শিশুদের অধিকার সমুন্নত রাখতে পিতা-মাতার দায়িত্ব ও 
৪। শিশুদের মতামতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন।

শিশুদের বিশেষ মানবাধিকারের মধ্যে রয়েছে, 

১বেঁচে থাকার অধিকার
২.একটি নামের অধিকার
৩.শিশু সংক্রান্ত বিষয়ে তার মত প্রকাশের অধিকার
৪.স্বাধীনভাবে চিন্তার অধিকার
৫. বিবেক এবং ধর্মের অধিকার 
৬.অর্থনৈতিক আধিকার
 ৭.যৌন শোষণ থেকে সুরক্ষার অধিকার 

জাতিসংঘ বড়দের মত শিশু দের জন্য ও কিছু সুনির্দিষ্ট অধিকার ঘোষণা করে।১৯৮৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত শিশু অধিকার সনদে এই অধিকার গুলো কথা বলা হয়েছে। শিশু অধিকার সনদে মোট ৫৪ টি ধারা আছে।৫৪ টি ধারা মধ্যে ২৪ টি সরাসরি শিশুর সুরক্ষা বিষয়ক।

শিশু অধিকার উল্লেখ যোগ্য কিছু অধিকার তুলে ধরা হলো

১.১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু 
২.সব শিশুর সমান অধিকার 
৩.বাবা মা এবং বড়রা শিশু অধিকার সম্পর্কে সচেতন থেকে তাদের সঠিক পথে চলতে উপদেশ দিবে
৪.শিশুর তার নিজের ও বাবা মায়ের নাম সহ সঠিক পরিচয় ব্যবহারের অধিকারী হওয়া
৫.শিশু বেঁচে  থাকা ও বড় হওয়ার অধিকার রক্ষা করা
৬.শিশুর স্বাধীন চিন্তাশক্তির প্রকাশ বিবেক বুদ্ধির বিকাশ ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার নিশ্চিত করা 
৭.মারধর বা অন্যায় বকাঝকা থেকে শিশুকে রক্ষা করা 
৮.সময় মত খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান শিক্ষা চিকিৎসার সুযোগ পাওয়া 
৯.সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর  শিশুদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ধর্ম ও ভাষা চর্চার অধিকার রক্ষা করা 
১০.প্রতিটি শিশুর অবকাশ যাপন খেলাধুলার সংস্কৃতি ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ড অধিকার 
১১.অর্থনৈতিক শোষণ এবং যে কোন ঝুকিপূর্ণ কাজ থেকে বিরত থাকা 
১২.শিশুকে অন্যায় কাজে ব্যবহার না করা 
১৩.কোন শিশুকে যুদ্ধ বা সরাসরি সশস্ত্র প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে না দেয় 
১৪.শিশুর সম্মানবোধ ও গোপনীয়তা রক্ষা করা।

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads