কম্পিউটার অপারেটরের (Computer Operator) কাজ কি, বেতন কত, যোগ্যতা কি

কম্পিউটার অপারেটর
কম্পিউটার অপারেটর 

কম্পিউটার অপারেটর কি 

কম্পিউটার অপারেটর বলতে কি বুঝায়? কম্পিউটার অপারেটর বলতে সাধারণত কোন সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা এবং সেটাকে সম্পাদন করে নির্দিষ্ট কোন কাজ সম্পন্ন করার ব্যক্তিকে বোঝায়। অর্থাৎ কোন একটি প্রতিষ্ঠানে অথবা নিজ উদ্যোগে ব্যক্তিগতভাবে একটি কম্পিউটার ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পাদন করে কাজ সম্পাদনকারী কে কম্পিউটার অপারেটর বলা হয়। অর্থাৎ যিনি কম্পিউটার ব্যবহার করে বিশেষ করে মাইক্রোসফট ওয়ার্ড সফটওয়্যার টি ব্যবহার করে, পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সম্পাদনের কাজ করেন তাকেই কম্পিউটার অপারেটর বলা যায়। 


কম্পিউটার অপারেটরের যোগ্যতা

  • মাইক্রোসফট অফিস সফটওয়্যার টি ভালোভাবে জানতে হবে
  • ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করার যোগ্যতা থাকতে হবে
  • ভালো ইংরেজিতে অথবা বাংলাতে টাইপিং জানতে হবে
  • একজন কম্পিউটার অপারেটর কে সঠিক সময়ে কাজ সম্পাদন করতে হবে
  • সঠিক সময় কাজ করার চাপ নিতে জানতে হবে
কম্পিউটারে অপারেটরে যোগ্যতা সম্পর্কে কি আর বলবো। কম্পিউটার অপারেটররা সাধারণত মাইক্রোসফট ওয়ার্ড নামক একটি সফটওয়্যার রয়েছে যেটার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সম্পাদনের কাজ করেন। অথবা অন্যভাবে বলতে পারি ওয়ার্ড প্রসেসিং সংক্রান্ত যেকোনো সফটওয়্যারের মাধ্যমে তথ্য সম্পাদন করা সংক্রান্ত কাজ করার যোগ্যতা থাকা। আরো সহজ ভাবে বলি microsoft office software এর মাধ্যমে বা এটার মতো অন্য যে সফটওয়্যার গুলো রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে ইংরেজি অথবা বাংলা অক্ষর টাইপ করে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করার যোগ্যতা থাকতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ 
তথ্য সম্পাদনের কাজ বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। একটি পত্রিকার জন্য একটি প্রতিবেদন কম্পিউটারের মাধ্যমে সম্পাদন বা টাইপিং সম্পন্ন করা কে এক ধরনের কম্পিউটারের অপারেটরের যোগ্যতার কাজ ধরা যায়। আবার দলিল লেখা, প্রশ্নপত্র তৈরি করা, চুক্তিপত্র লেখা, ওয়েবসাইটের জন্য প্রতিবেদন লেখা, এসাইনমেন্ট লেখা, ইন্টারনেটে যেকোনো ফরম পূরণ করা, ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইমেইল এর মাধ্যমে যোগাযোগ সম্পন্ন করা এ ধরনের খুঁটিনাটি সব কাজের যোগ্যতা হচ্ছে কম্পিউটার অপারেটরের যোগ্যতা। 

কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ

কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে উপরে বর্ণিত কাজগুলো করার যোগ্যতা থাকতে হবে। বিশেষ করে মাইক্রোসফট অফিস সফটওয়্যারটি ভালো করে আয়ত্ত করলে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পাওয়া সহজ হয়। বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়। তাই আপনি চাইলে কম্পিউটারে অপারেটরের চাকরির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে তেমন বেশি কাজ শিখতে হবে না শুধুমাত্র মাইক্রোসফট অফিসের যতগুলো কাজ রয়েছে সেগুলো মোটামুটি ভাবে শিখে নিলেই কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিতে পারবেন। যেহেতু প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটরের প্রয়োজন হয় তাই আপনি নিজেকে সেভাবে প্রস্তুত করলে সে সকল প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পাবার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। 

কম্পিউটার অপারেটর এর কাজ কি

কম্পিউটার অপারেটরের অনেক কাজ থাকে। একজন কম্পিউটারের অপারেটর যেই প্রতিষ্ঠানের অধীনে কাজ করবেন সেই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে যে সকল কাজ করতে দেওয়া হবে তা সময় মতো করতে হবে। প্রতিষ্ঠান ভেদে কাজের ভিন্নতা অবশ্যই থাকবে। যদি কোন প্রতিষ্ঠানে এইচ আর ডিপার্টমেন্টে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন সেক্ষেত্রে উত্তর প্রতিষ্ঠানের যেসকল লোকবল রয়েছে তাদের দৈনিক হাজিরা, মাসিক বেতনের হিসাব, নতুন লোক সংক্রান্ত তথ্য, কর্মে ছাটাই সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করা ইত্যাদি এ ধরনের কাজের চাপ থাকতে পারে। 

আবার যদি আপনি একটি এক্সপোর্ট ইমপোর্ট প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করেন সে ক্ষেত্রে আপনার কাজের ধরন অন্যরকম হবে। এই ক্ষেত্রে হয়তো আপনাকে বিভিন্ন বিদেশী ওয়েবসাইট ঘাটাঘাটি করে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করতে হবে পাশাপাশি যে সকল দেশে বা বিদেশে অন্য আমদানি বা রপ্তানি করা হবে সেই সকল দেশের সঙ্গে কম্পিউটারের মাধ্যমে ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ সম্পন্ন করতে হবে। 

অন্য একটি উদাহরণের মাধ্যমে বলি যদি আপনি একটু হসপিটালে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে চাকরি করেন সেক্ষেত্রেও কাজের ভিন্নতা থাকবে। একটি হসপিটালে যদি আপনি রিসিপশনে কাজ করেন সেক্ষেত্রে এক ধরনের কাজ থাকবে, আবার যদি আপনি ডায়গনস্টিক ইউনিটে কাজ করেন সেক্ষেত্রে আপনার অন্য কাজ থাকবে, কিংবা আপনি যদি হসপিটালে ক্যাশ কাউন্টারে কম্পিউটার অপারেটরের দায়িত্ব পালন করেন সেক্ষেত্রে আপনার অন্য কাজ হবে। 

অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এর কাজ কি

অফিস সহকারে কাম কম্পিউটার অপারেটর সাধারণত বিভিন্ন সরকারি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি গুলোতে দেখা যায়। যিনি কম্পিউটার অপারেটর তিনিই অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর। উপরে যেভাবে কম্পিউটার অপারেটরের কাজের বর্ণনা দিলাম ঠিক এমনিভাবে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এর কাজও একই রকম হবে। আপনি কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রাপ্ত হচ্ছেন সেটার উপর ভিত্তি করে আপনার কাজের ধরন নির্ধারিত হবে। তাই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয় যে কম্পিউটার অপারেটর শুধুমাত্র অমুক কাজটি করবে। 

কম্পিউটার অপারেটরের বেতন

কম্পিউটার অপারেটরের বেতন কত। একজন কম্পিউটারের অপারেটর যদিও প্রচুর পরিমাণ কাজ করেন কিন্তু সেই অনুপাতে বেতন আমার মতে বেশি নয়। একজন কম্পিউটার অপারেটর সাধারণত ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকার মত বেতন পেয়ে থাকেন। যদি কোন মাল্টিন্যাশনাল বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা যায় সে ক্ষেত্রে হয়তো 20000 টাকার মতো বেতন হতে পারে অথবা যদি ছোটখাটো কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন সে ক্ষেত্রে হয়তো বা বেতনের পরিমাণ আর একটু কম হবে। তবে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে মাসিক  20 হাজার টাকা বেতন হলে আমরা অনেকেই সেই কাজটি যত্ন সহকারে করে থাকি। অথবা যারা অনার্স লেভেলে পড়াশোনা করতেছে তারাও এই চাকরিগুলো যত্ন সহকারে করে থাকেন। 

যারা সবেমাত্র অনার্স কমপ্লিট করেছেন অথবা স্নাতক বা অনার্সে অধ্যায়নরত রয়েছেন তারা এ ধরনের চাকরিতে নিজেদেরকে নিযুক্ত করতে পারেন। 

কম্পিউটার অপারেটর এর কাজ কোথায় শিখবেন

কম্পিউটার অপারেটরের কাজ কোথায় শিখবেন। কম্পিউটার অপারেটরের কাজ আপনি যেই মহল্লা বা এলাকায় থাকেন অবশ্যই সেখানে কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার। বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে কোন কম্পিউটার ট্রেনিং সেন্টার থেকে কম্পিউটার অপারেটর এর কাজ শেখা যায়। 

তবে আপনার যদি বিচক্ষণতা থাকে তাহলে নিজে নিজেও কম্পিউটার অপারেটরের কাজ শিখতে পারবেন। আপনার যদি অলরেডি একটি কম্পিউটার থাকে তাহলে সেটিতে খুব সহজেই নিজে নিজেই কম্পিউটার অপারেটরের কাজ শিখতে পারবেন। সেটার জন্য আপনার কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশনের প্রয়োজন হবে। যদি সেটি থাকে তাহলে ইউটিউব থেকে কম্পিউটার অপারেটরের কাজগুলো শিখতে পারবেন। 

যদি আপনি ইউটিউবে মাইক্রোসফট অফিস সফটওয়্যার এর টিউটোরিয়াল সংক্রান্ত ভিডিও গুলো দেখেন তাহলে সেখান থেকেই কম্পিউটার অপারেটরের কাজগুলো আয়ত্ত করতে পারবেন।মাইক্রোসফট পাওয়ারপয়েন্ট, মাইক্রোসফট এক্সেল, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এই কয়টা সফটওয়্যার এর টিউটোরিয়াল ইউটিউব থেকে দেখে দেখেও শেখা সম্ভব। 

কম্পিউটার অপারেটর আয় 

একজন কম্পিউটার অপারেটর চাকরি করে আয় করতে পারবেন পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করেও আয় করতে পারবেন। একজন কম্পিউটার অপারেটর সাধারণত ফ্রিল্যান্সিং সেক্টরে ডাটা এন্ট্রি সংক্রান্ত কাজ করে ঘরে বসে থেকেই প্রচুর টাকা ইনকাম করতে পারে। 

একজন কম্পিউটার অপারেটর চাইলে ব্যবসা করেও প্রচুর টাকা আয় করতে পারবে। যদি আপনার কাছে পর্যাপ্ত পুঁজি থাকে তাহলে একটি কম্পিউটার দোকান করে সেখানে কম্পিউটার অপারেটর সংক্রান্ত কাজগুলো করে আয় করতে পারবেন। যদি আপনি অন্যের অধীনে থেকে কাজ করতে পছন্দ না করেন সেক্ষেত্রে আপনি একটি দোকান করে সেখান থেকেও প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন। 

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads