চুপ থাকার ফজিলত ইসলামে কি সম্পর্কে বলা হয়েছে

চুপ থাকার ফজিলত
চুপ থাকার ফজিলত

চুপ থাকার ফজিলত

চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে জানতে অনেকেই ইন্টারনেটে সার্চ করে থাকেন অথবা বিভিন্ন জনকে জিজ্ঞেস করে থাকেন। তাই আজকে আমরা চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে আলোচনা করব। চুপ থাকা ভালো নাকি অহংকারের লক্ষণ সেটা আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না। তাই আজকে হাদিসের আলোকে এ বিষয়টিকে ফলাশা করার চেষ্টা করবো অথবা চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে আমরা জানবো। প্রকৃত অর্থে চুপ থাকা উত্তম চরিত্রের অধিকারী লোক এদের মধ্যেই বিদ্যমান থাকে। 

আমাদের মাঝে অনেকে এমন রয়েছে যারা বেহুদা কথাবার্তা বলতে পছন্দ করেন না তারা বেশিরভাগ সময় চুপ থাকেন। এটি হচ্ছে একটি উত্তম চরিত্রের লক্ষণ। কেননা হাদিসে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ চুপ থাকাকে উত্তম চরিত্রের লক্ষণ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন চুপ থাকার মাধ্যমে মুসলমানরা নাজাত পাবে। তাই বেহুদা কথাবার্তা না বলে মুসলমানদের উচিত হচ্ছে নিরবে চুপ থেকে এবাদত বন্দেগীতে মশগুল থাকা। 

চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে হাদিস

চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। এ ব্যাপারে হযরত আবু হুরায়রা রাঃ এর একটি প্রসিদ্ধ হাদিস এর রেফারেন্স দিতে পারি - যেমনঃ 

১. হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‌যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলা ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার অতিথির অভ্যর্থনা ও আদর-যত্ন করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলা ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে অথবা নীরব থাকে।’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি)

চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে আরো একটি প্রসিদ্ধ হাদিস রয়েছে। যে হাদিসে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু সাল্লাম চুপ থাকাকে নাজাত প্রাপ্তির অন্যতম মাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাই নাজাত প্রাপ্তির জন্য আমাদের মুসলমানদের উচিত এই সুন্দর এবাদতটি আমল করা। 

২. হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি নীরব থাকলো, সে নাজাত (মুক্তি) পেলো।’ (তিরমিজি)

চুপ থাকা অহংকারের লক্ষণ নাকি উত্তম চরিত্রের লক্ষণ। চুপ থাকার ফজিলত

ইতিমধ্যে আমরা নিশ্চয়ই চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আমরা অনেকেই মনে করি যারা চুপ থাকে তারা অহংকারী লোক। প্রকৃত অর্থে এ ধারণাটি ভুল। চুপ থাকার মানে অহংকারী নয়। চুপ থাকা কি আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ উৎসাহিত করেছেন। কারণ আমরা যখন বেশি কথা বলব তখন কথার মাঝে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যদি আমরা কম কথা বলি তাহলে সেখানে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে। 

মুসলমানরা তো আর বেহুদা কথাবার্তা বলে সময় নষ্ট করবে না। কারণ মুসলমানের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তারা উত্তম চরিত্রের অধিকারী হবে। যদি মুসলমানরা উত্তম চরিত্রের অধিকারী হতে চায় তাহলে অবশ্যই চুপ থাকতে হবে। অন্যের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে অন্যের মতামত কে বেশি গুরুত্ব সহকারে শুনতে হবে। নিজের চুপ থেকে অন্যের কথা বেশি শোনার মাধ্যমে লোকজনের নিকট নিজেকে প্রিয়জন হিসেবে পরিচিত করানো যায়। 

তাই চুপ থাকার গুরুত্বপূর্ণ এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যটি আমাদের মুসলমান হিসেবে প্রত্যেকের আয়ত্ত করা উচিত। বেহুদা কথাবার্তা না বলে, বেহুদা খেল খুশিতে না মুঝে, বেহুদা আড্ডা মাস্তিতে সময় নষ্ট না করে বরং সেই সময়টাতে আল্লাহ পাকের এবাদত এর মাধ্যমে সময় ব্যয় করা যায়। নীরব থেকেও প্রতিনিয়ত আল্লাহপাকের জিকিরের মাধ্যমে এবাদতে মশগুল থাকা সম্ভব। তাই যারা নীরব থাকার ফজিলত সম্পর্কে জানতে চাচ্ছিলেন আশা করছি সঠিক উত্তরটি পেয়েছেন। 

আমাদের আজকের আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে। যেহেতু আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ নসিহত করেছেন। মুসলমান হিসেবে অথবা প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এর উম্মত হিসেবে তার নসিহত টি পালন করা আমাদের কর্তব্য। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে চুপ থাকার ফজিলত সম্পর্কে জেনে আমল করার তৌফিক দান করুন। 

শাহীন

আমি শাহীন । পেশায় একজন ব্যবসায়ী । পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করতে পছন্দ করি। আশা করছি আমার শেয়ারকৃত তথ্য থেকে আপনারা উপকৃত হচ্ছেন আর তা হলেই আমার পরিশ্রম স্বার্থক।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads