স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস

কুরআন সুন্নাহ এর বর্ণনা অনুযায়ী সব সময় স্বামীর আনুগত্য থাকার নির্দেশ রয়েছে ।কিন্তু স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর জান্নাত হাদিসের বর্ণনা এ জাতীয় কোনো কিছু নেই। এটি হাদিসের বর্ণনা নয়। এক নারীর সাহাবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম মেয়ের সঙ্গে কথা বলার সম্পূর্ণ করলে তিনি তিনি তাকে বললেনঃ হে নারী।

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস কথাটা কি সঠিক?

স্বামীর সম্মান ও মর্যাদা বোঝাতে গিয়ে অনেকেই বলেন যে স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর জান্নাত। আসলেই কি কথাটি সঠিক। হাদীসটি কী সঠিক হিসেবে প্রমাণিত।

স্ত্রীর কাছে স্বামীর মর্যাদা অনেক বেশি। বর্ণনা অনুযায়ী স্বামীর আনুগত্য থাকার নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর জান্নাত। হাদিসের বর্ণনা এ জাতীয় কোন কিছু নেই। ইসলামে বিষয়টি প্রমাণিত নয়।

মুসনাদে আহমাদ হাদিসে স্বামী স্ত্রীর জন্য জান্নাত জাহান্নাম বলে উপমা দেয়া হয়েছে। স্বামীকে অধিক মর্যাদা দেয়া হয়েছে। স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস হাদীসে এসেছে এক নারী সাহাবী রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম এর সঙ্গে কথা বলা সম্পন্ন করলে তিনি তাকে বলেন হে নারী তোমার স্বামী আছে কি। সে বলল জ্বি হ্যাঁ আছে আমার স্বামী।

আরো পড়ুনঃসিয়াম ফরজ করার উদ্দেশ্য কি

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন তুমি তার জন্য কেমন,

সে বলল আমি তার আনুগত্য ও খেদমতের কমিটি বা অবহেলা করি না। তবে যেটা করতে অসমর্থ হই তা ব্যতীত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন তুমি খেয়াল রেখো যে তুমি তার হৃদয়ের কোথায় অবস্থান করছে। কেননা সে তোমার জান্নাত এবং জাহান্নাম।স্ত্রীর কাছে স্বামী অনেক মর্যাদাশীল। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম সবসময়ই স্ত্রীদের নসীহত পেশ করেছেন যে তার যেন স্বামীর আনুগত্য করে।তাদের মেনে চলে। স্বামীর মর্যাদা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে

আব্দুল্লাহ ইবনে আবী আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন

মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহু সিরিয়া থেকে ফিরে এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কে সেজদা করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন তিনি বললেন আমি সিরিয়াস গিয়ে দেখতে পাই যে সেখানে লোকেরা তাদের ধর্মীয় নেতা ও শাসকদের সেজদা করে। তাই আমি মনে মনে আশা পোষণ করলাম যে আমি আপনার সামনে তাই করবো।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন তোমরা তা করো না। কেননা আমি যদি কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সেজদা করার নির্দেশ দিতাম তাহলে ইস্ত্রী নির্দেশ নির্দেশ যেন তারা তাদের স্বামীদের সেজদাহ করে।

শপথ যার হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ স্ত্রী তার স্বামীর প্রাপ্য অধিকার আদায় না করা পর্যন্ত তার প্রভুর প্রাপ্য অধিকার আদায় করতে সক্ষম হবে না। স্ত্রীর মধ্যে থাকা অবস্থায় তার সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করতে চাইলে স্ত্রী তার প্রত্যাখ্যান করা উচিত নয়। 

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস মনে রাখা জরুরী,

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর জান্নাত কথাটি হাদিসে এভাবে সরাসরি না থাকলেও স্ত্রীর কাছে স্বামীর মর্যাদা অনেক বেশি উল্লেখিত হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। স্ত্রীর জন্য স্বামীর প্রতি খেয়াল রাখা ও তাদের আনুগত্য করা জরুরি। এদের দাম্পত্য জীবন সুখী ও সুন্দর।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের প্রতি যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা রেখে দাম্পত্য জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন।নিজের উপর আমল করার তাওফীক দান করুন আমীন।

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস  এই কথার কি ভিত্তি আছে, 

প্রশ্ন: প্রায় অনেককে বলতে শোনা যায় স্ত্রী জন্য স্বামীর পায়ের নিচে জান্নাত ।এই কথাটির কোন ভিত্তি আছে। নাকি এটি সম্পূর্ণ মানুষের বানানো কথা।

উত্তর: অনেকে কথাটি হাদীস হিসেবে পেশ করে থাকেন। তবে বাক্য কোন হাদীসে পাওয়া যায় না। সুতার এদিকে হাদিথ হিসেবে বলা যাবে না। তবে কিছু হাদীসে এর মর্মার্থ পাওয়া যায় বিধায় কথাকে সম্পূর্ণ মিথ্যা বলা যাবে না।

আরো পড়ুনঃ স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস

যেমন এক হাদীসে এসেছে একবার এক নারী সাহাবী কোন প্রয়োজনে রাসূলের কাছে এলেন।। যাওয়ার সময় রাসুল সালাম তাকে জিজ্ঞেস করলেন তোমার কি স্বামী আছে তিনি বলেন জি আছে। নবীজী বললেন তাঁর সঙ্গে তোমার আচরণ কেমন সে বলল আমি যথাসাধ্য তার সঙ্গে ভালো আচরণ করার চেষ্টা করি। তখন নবীজী বললেন হ্যাঁ তার সঙ্গে তোমার আচরণ এর বিষয়ে সজাগ থাকো কারন সে তোমার জান্নাত তোমার জাহান্নাম।

অপর হাদিসে এসেছে রাসূল সাল্লাহু সাল্লাম বলেন,

নারী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ঠিকমত আদায় করবে রমজানের রোজা রাখবে আপন লজ্জাস্থানের হেফাযত করবে স্বামীর আনুগত্য করবে তখন সে জান্নাতের সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে।

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস

বহুল প্রচলিত একটি বস্তুকে হযরত  মুহাম্মদ সাল্লাম বলিয়াছেন  স্ত্রীর বেহেশত স্বামীর পায়ের নিচে একথাটি একটি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট কথা। কোন সহীহ সনদে কথাটি রাসূল সাল্লাল্লাহু সালাম থেকে বর্ণিত হয়েছে বলে জানা যায় না। কুরআন ও হাদীসের নির্দেশনা থেকে বুঝা যায় যে স্বামী  স্ত্রী উভয়ের জান্নাত উভয়ের হাতে। উভয়ের প্রতি উভয়ের দায়িত্ব পালন ও অধিকার আদায়ের মাধ্যমেই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ সম্ভব।

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিসে স্বামীর ১৭ টি হক আছে

স্বামী-স্ত্রী একে অপরের অঙ্গস্বরূপ। সুতরাং একে অপরের হকের প্রতি লক্ষ রাখবে, তাতেই দাম্পত্যজীবন সুখের হবে। আজ আমরা জেনে নেবো ইসলামের দৃষ্টিতে স্ত্রীর কাছে থাকা স্বামীর ১৭টি হকের কথা-

১.সর্বদা স্বামীর মন জয় করার চেষ্টা করা।

২.স্বামীর সাথে অসংযত আচরণ না করা,স্বামীকে কষ্ট না দেওয়া।

৩.শরীয়ত সম্মত প্রত্যেক কাজে স্বামীর আনুগত্য করা এবং শরীয়ত বিরোধী কাজে অপারগতা তুলে ধরা এবং স্বামীর সাথে নরম ভাষায় কথা বলা।

৪.প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভরণ-পোষণ দাবি না করা।

৫.পর-পুরুষের সাথে কোন ধরনের সম্পর্ক না রাখা।

৬.স্বামীর অনুমতি ছাড়া কাউকে ঘরে ঢোকার অনুমিত না দেওয়া।

৭.অনুমতি ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া। 

৮.স্বামীর সম্পদ হেফাজত করা। অনুমতি ছাড়া সেখান থেকে কাউকে কোন কিছু না দেওয়া।

৯.স্বামীকে অসন্তুষ্ট করে অতিরিক্ত নফল নামাজে মশগুল না থাকা,অতিরিক্ত নফল রোজা না রাখা।

১০.স্বামী মেলামেশার জন্য আহবান করলে শরীয়ত সম্মত কোন ওজর না থাকলে আপত্তি না করা।

১১.মীর আমানত হিসেবে নিজের ইজ্জত আব্রু হেফাজত করা,কোন ধরনের খেয়ানত না করা।

১২.স্বামী দরিদ্র কিংবা অসুন্দর হওয়ার কারণে তাকে তুচ্ছ না করা।

১৩.স্বামীকে কোন গুনাহের কাজ করতে দেখলে আদবের সাথে,সম্মানের সাথে,নরম মেজাজে তাকে বোঝানো এবং তাকে বিরত রাখা।

১৪.স্বামীর নাম ধরে না ডাকা।

১৫.কারো কাছে স্বামীর দোষ-ত্রুটি বর্ণনা না করা।

১৬.শ্বশুর-শাশুরিকে সম্মানের পাত্র মন করা,তাদেরকে শ্রদ্ধা করা,ঝগড়া- বিবাদ কিংবা অন্য কোন উপায়ে কষ্ট না দেওয়া।

১৭.সন্তানদের লালন পালনে অবহেলা না করা।

আল্লাহ-তায়ালা আমাদের মা-বোন এবং সমাজের প্রত্যেকটি স্ত্রীকে এই গুণগুলোতে গুণান্বিত হওয়ার তৌফিক দান করুন। আমিন।

আরো পড়ুনঃ জিমেইল আইডি কিভাবে খুলবো

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস,উক্তিটি কি সঠিক?

স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস,উক্তিটি সঠিক নয়।সমাজে প্রচলিত একটি ভুল উক্তি হল স্বামীর-পায়ের-নিচে-স্ত্রীর-বেহেশত ।আরও মারাত্ক বিষয় হলো -এ হাদিস হিসাবে চালিয়ে দেওয়া।ইসলামি শরিয়ত এমন কথকে সামথন করেে না ।এমন উকতির কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। 

সমাজে একটি ভৃল উকতি হলো-স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত।এটি কে আবিষ্কার করেছে সেটি ও অজানা।তবে এটি বলা তবে  যয় যে স্বামীর মর্যাদা দেওয়ার ক্ষেত্রে এই উক্তিটি করা হয়েছে। এটি হাদিসে বলা না হলে ও অনেক লোক বলে থাকে যে স্বামীর-পায়ের-নিচে-স্ত্রীর-বেহেশত ।

তাই পরিশেষে বলা যায় স্বামীর পায়ের নিচে স্ত্রীর বেহেশত হাদিস উক্তিটির না থাকলেও আগেকার প্রচলিত মানুষ বলে থাকে এটি হাদিসের কথা। আর আমরা স্বামীকে মযাদার কারনে এই কথাটি ঊলেখ করে থাকি।


Md:Aklacur Rahaman

মোঃএখলাছুর রহমান,আমি উত্তরা টাউন ইউনিভার্সিটি কলেজে পলিটিক্যাল সাইন্স ডিপার্টমেন্টে অধ্যায়নরত আছি,আমি sorolmanus.com ওয়েবসাইটে লেখালেখি করে থাকি।আমার ব্যক্তিগত arnilofficial.com একটি তথ্যমূলক ব্লগ ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত লেখালেখি করে থাকি।টেকনোলজির প্রতি আমি পাগল।বই পড়তে আমার ভালো লাগে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads