শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি

প্রতিবছর বাংলাদেশের 14 ই ডিসেম্বর দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। হাজার 1971 সালের 10 থেকে 14 ই ডিসেম্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর সকল বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। এই কাজই বাংলাদেশীদের মধ্যে রাজাকার আলবদর আলশামস বাহিনীর সদস্যরা তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে সহযোগিতা করেছিল। এই হত্যাকাণ্ড বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্য এই নির্বাচিত হত্যাকাণ্ডটি পাকিস্তানি বাহিনী চালিয়েছিল।ব্লোগটি মূলত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা।

আরো পড়ুনঃ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ কে? 

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি? ও এই সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস

জানা আমাদের জন্য অত্যন্ত জরুরী। বুদ্ধিজীবী একটি জাতির মেরুদন্ড হিসেবে কাজ করে। বাঙালি জাতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে দিতে পাকহানাদার বাহিনী এই জঘন্যতম কর্মকাণ্ড চালায় 1971 সালের মুক্তিযুদ্ধের শেষ প্রান্তিকে, তাদের নিশ্চিত পরাজয় জেনেই তারা এই বর্বোরোচিত হামলাটি চালিয়েছিল যাতে করে বাঙালি মেধাশূন্য হয় এবং ভবিষ্যতে যেন বাঙালি জাতিকে কেউ আর সামনের দিকে এগিয়ে নিতে না পারে এই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যেই পাকহানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির  মেধাশূন্যকরার জন্য এই হত্যাকাণ্ডটি চালানো হয়েছিল। বাঙালি জাতির জন্য শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের একটি শোকাহত দিন।

পাকিস্তানী সেনাবাহিনীরা 10 থেকে 14 ডিসেম্বর মধ্য বাংলাদেশের সকল প্রথম শ্রেণীর মানুষ অর্থাৎ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সাথে কাজে সাহায্য করে রাজাকার আলবদর আলশামস বাহিনীর সদস্য। 

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস প্রেক্ষাপট

বাংলাদেশের বিজয়ের প্রাক্কালে হাজার 1971 সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিশ্চিত পরাজয় জেনেই রাজাকার, আলবদর, আলশামস, বাহিনীর সাহায্যে বাংলাদেশের অসংখ্য কবি,সাহিত্যিক, ডাক্তার, ডাক্তার ,গবেষক, শিক্ষাবিদের নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তাদের উপর অমানবিক নির্যাতন করে তাদের হত্যা করেছিল। বাংলাদেশের বিজয় নিশ্চিত বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার উদ্দেশ্যে এই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তাহলে আমরা কিছুটা বুঝতে পারলাম শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি বিষয়টি আরো পরিষ্কারভাবে জেনে নেব। 

আরো পড়ুনঃ ২০২৩ সালের সরকারি ছুটির তালিকা বাংলাদেশ 

হত্যার পর ঢাকা মিরপুর রায়েরবাজার সহ বিভিন্ন গণকবরে ছিল শুধু লাশ আর লাশ, হাজার 1971 সালের 16 ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর স্বজনরা তাদের লাশ সনাক্ত করে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কি এবং কিভাবে আমরা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করব

কারো শরীরে পাওয়া যায় অনেক আঘাতের চিহ্ন, আবার কারো একটা গুলি আবার কারো একের অধিক কারো চোখ বাঁধা আবার অনেককে করা হয়েছে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই। এই কারণে পশ্চিম পাকিস্তান কে বাঙালি জাতি ঘৃণা করে থাকে। তাই আমাদের উচিত আমাদের নতুন প্রজন্মকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি তা জানানোর। এই ধরনের জিনিস গুলো দেখে বোঝা যায় হত্যার আগে তাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছে।

পরবর্তীতে 1972 সালে প্রকাশিত জাতীয়ভাবে বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় ছাপা সংবাদ ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশিত ম্যাগাজিন নিউজ, এর সাংবাদিক লেখা থেকে জানতে পারা যায় যা মোট এক হাজার 70 জন বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংজ্ঞা

10 ফেব্রুয়ারি 2021 শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংজ্ঞা চূড়ান্ত করা হয়েছে। সংজ্ঞা অনুযায়ী মার্চ 19 71 সাল থেকে 1972 সালের 31 জানুয়ারি সময়ে যে সকল বাঙালি বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, গবেষক, আইনজীবী, প্রকৌশলী ,চিত্রশিল্পী, ভাস্কর্যশিল্পী, সাংস্কৃতিক, সাংবাদিক, সরকারি ও  বেসরকারি কর্মচারী রাজনৈতিক শিক্ষক স্থাপতি সমাজসেবী চলচ্চিত্র নাটক ও সঙ্গীতের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ কর্মের মাধ্যমে দেশের অদ্ভুত অবদান রেখেছেন। এর ফলে যাঁরা পাকিস্তানি সেনাবাহিনী অথবা তাদের সাহায্যকারীদের হত্যা বা আজীবনের জন্য নিখোঁজ হয়েছেন তারা শহীদ বুদ্ধিজীবী।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের তদন্ত কমিটি

শহীদ বুদ্ধিজীবী উড়ন্ত  1994 নামে একটি গ্রন্থ বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছিল, সেখান থেকে জানা যায় 232 জন বুদ্ধিজীবী হত্যা হয়েছে। তালিকা অসম্পূর্ণতায় গ্রন্থের মাধ্যমে বলা যায়। 18 ডিসেম্বর 1971 মতান্তর 29 তারিখে বেসরকারিভাবে একটি বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় যার প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি।

এরপর গঠিত হয় বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটি

এই কমিটির প্রাথমিক তথ্য উঠে আসে পাকিস্তানের রাও ফরমান আলী বাংলাদেশের প্রায় 20,000  হাজার বুদ্ধিজীবীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন।

কিন্তু তার পরিকল্পনা সফল হয়নি  আসলে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি এই বিষয়টি জানতে হলে আরো অনেক খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে আগে জানতে হবে। কারণ রাও ফরমান আলীর পরিকল্পনা ছিল সফল শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদের গভর্নর হাউসে নিমন্ত্রণ করে এনে হত্যা করা।

বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন জহির রায়হান

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি তিনি বলেন এরা বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও বুদ্ধিজীবীদের বাছাই করে তারপর আঘাত হেনেছে। তারপর 30 জানুয়ারী 1972 সালে তদন্ত কমিটির প্রধান জহির রায়হান নিখোঁজ হয়েছেন। 31 শে ডিসেম্বর 1971 সালে তাজউদ্দিন আহমেদ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

আরো পড়ুনঃগরু মোটাতাজাকরণে দানাদার খাদ্য তালিকা

কিন্তু তার সেই সিদ্ধান্ত কার্যকারিতা পাইনি

27 শে ডিসেম্বর 1971 সালে দৈনিক আজাদের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পূর্ব পরিকল্পনা করা হয়েছিল। এই হত্যার সাথে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন ক্যাপ্টেন তারেক  বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আসলাম, তাজ, ভিসি প্রফেসর ডাক্তার সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন, মোহর আলী, আলবদরের এবিএম খালেক মজুমদার আশরাফুজ্জামান খান ও চৌধুরী মহিউদ্দিন এর নেতৃত্বে এদের নেতৃত্ব দেয় মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী।

24 সেপ্টেম্বরহাজার 997 সালে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার ঘটনাতে রমনা থানায় প্রথম একটি মামলা দায়ের করা হয় মামলা নং 15, চৌধুরী মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান কে আসামী করে সেই মামলাটি দায়ের করা হয়। তারা দুজনেই ছিলেন আল বদর বাহিনীর সদস্য। মামলাটি দায়ের করেছিলেন অধ্যাপক  গিয়াস উদ্দিনের বোন ফরিদা বানু। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের ঘোষণা

1971 সালে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। তারা পরিকল্পিতভাবে 16 ই ডিসেম্বর এর সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের সর্ব প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ   14 কে ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণা করেন।

আরো পড়ুনঃমিলনের সময় নারীদের করণীয় । লজ্জা নয় জানুন

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ

হাজার 971 সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নিহত বুদ্ধিজীবীগণ এর স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়। স্মৃতিসৌধটি স্থাপন করেন মোস্তফা আলী কুদ্দুস। 1991 সালে ঢাকার বাজারে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে অন্য আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ শুরু হয় যেটি 14 ই ডিসেম্বর 1999 সালে উদ্বোধন করেছিলেন তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নকশার কাজ করেন দামি আল সাথী ও ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। 

বাংলাদেশ ডাক বিভাগ শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে একটি স্মারক ডাকটিকেট এর সিরিজ প্রকাশিত করেছে ।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালনের উদ্দেশ্য কি?

1971 সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ও তাদের 14 ই December ও যুদ্ধের সময় যেসকল বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে তাদের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে 14 ই December শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।

বুদ্ধিজীবী দিবস কবে? 

বুদ্ধিজীবী দিবস প্রতিবছর 14 ই December পালন করা হয়।

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করার উপায়

পাক হানাদার বাহিনীর বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী হত্যার মূল উদ্দেশ্য ছিল দেশকে মেধাশূন্য করা। এবং এই দিন এলে বাংলা শোকে মুহ্যমান হয়ে যায়। সারাদেশে মানুষ মোমবাতি প্রজ্জলন করার মাধ্যমে শহীদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানায় এবং শহীদদের আত্মার মাগফেরাত এর জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

বুদ্ধিজীবীদের কারা হত্যা করেছিল

বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা এবং তাদের সহযোগী রাজাকার আলবদররা।

Md:Aklacur Rahaman

মোঃএখলাছুর রহমান,আমি উত্তরা টাউন ইউনিভার্সিটি কলেজে পলিটিক্যাল সাইন্স ডিপার্টমেন্টে অধ্যায়নরত আছি,আমি sorolmanus.com ওয়েবসাইটে লেখালেখি করে থাকি।আমার ব্যক্তিগত arnilofficial.com একটি তথ্যমূলক ব্লগ ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত লেখালেখি করে থাকি।টেকনোলজির প্রতি আমি পাগল।বই পড়তে আমার ভালো লাগে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads